গাড়ির চালকের সঙ্গে ‘সম্পর্ক’, আদালতে আত্মসমর্পণ বিজেপি বিধায়ক চন্দনার

BJP MLA Chandana Bauri: গত ১৯ অগস্ট গঙ্গাজলঘটি থানায় বিধায়কের বিরুদ্ধে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন চন্দনার গাড়ির চালক কৃষ্ণ কুণ্ডুর স্ত্রী রুম্পা কুণ্ডু।

গাড়ির চালকের সঙ্গে 'সম্পর্ক', আদালতে আত্মসমর্পণ বিজেপি বিধায়ক চন্দনার
চন্দনা বাউড়ি, ছবি: ফেসবুক
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 02, 2021 | 2:45 PM

বাঁকুড়া: অবশেষে আত্মসমর্পণ শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির (Chandana Bauri)। বৃহস্পতিবার সকালে বাঁকুড়া জেলা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। কিন্তু, সেই আত্মসমর্পণ এখনই কার্যকর হল না বলে জানিয়েছেন চন্দনার আইনজীবী লোকেশ মুখোপাধ্য়ায়। গত ১৯ অগস্ট গঙ্গাজলঘটি থানায় বিধায়কের বিরুদ্ধে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন চন্দনার গাড়ির চালক কৃষ্ণ কুণ্ডুর স্ত্রী রুম্পা কুণ্ডু।

লিখিত অভিযোগে রুম্পা জানিয়েছিলেন, বিজেপি (BJP) বিধায়ক গোপনে কৃষ্ণের সঙ্গে বিয়ে করেছেন। তাঁদের মধ্যে একটি সম্পর্কও ছিল। সেই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বিধায়ক চন্দনা বাউরী ও কৃষ্ণ কুন্ডুর বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৪৯৮ এ ধারায় বধূ নির্যাতন, ৪৯৪ ধারায় বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, ৪০৬ নম্বর ধারায় বিশ্বাসভঙ্গ ও ৫০৬ নম্বর ধারায় হুমকি দেওয়ার মামলা রুজু করে।

কিন্তু, চন্দনা আদালতে আত্মসমর্পণ করলেও তা কার্যকর হল না বলেই জানিয়েছেন, চন্দনার আইনজীবী লোকেশ মুখোপাধ্যায়।  তিনি এদিন বলেন, “সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন সাংসদ-বিধায়কদের মামলা বারাসাত আদালতে হবে। সেই মোতাবেক, জেলা আদালত থেকে এই মামলা বারাসাত আদালতে স্থানান্তরিত করা হল। ফলে আজই  বিধায়ক আত্মসমর্পণ করলেও তা কার্যকর হল না। ”

চন্দনার আত্মসমর্পণের পরেই এদিন আদালতে হাজির হন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রি শেখর জানা। তিনি স্পষ্টই বলেন, “চন্দনা একজন দরিদ্র পিছিয়ে পড়া গৃহবধূ। তিনি বিধায়ক হয়েছেন এটা মানতে পারছে না শাসক দল। এমনিতেই আমাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে এমনিতেই একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেইজন্য় চন্দনাকেও একইভাবে ফাঁসানো হয়েছে। কৃষ্ণ কুণ্ডু নামে কাউকে আমরা চিনি না। ইচ্ছে করে ওঁকে ফাঁসানো হয়েছে।”

সম্প্রতি, চন্দনা বাউরিকে তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। সরাসরি পুলিশের বিরুদ্ধে  এমন অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন অধিকারী পুত্র। নন্দীগ্রামের বিধায়কের স্পষ্ট অভিযোগ, “চন্দনা বাউরিকে পুলিশ সরাসরি তৃণমূলে যোগ দিতে বলেছে। কিন্তু ভাঙা ঘরে থাকা তফসিলি পরিবারের মহিলা চন্দনা বাউরি আত্মসমর্পণ করেননি। তিনি আগেও বিজেপির সঙ্গে ছিলেন, এখনও বিজেপির সঙ্গেই রয়েছেন। চন্দনা পুলিশকে সরাসরি বলেছে ‘৬ মাস জেল খাটুন।’ বিজেপির হাজার হাজার কর্মীরা জেলে আছেন কারণ তাঁরা এই মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বিজেপির ঝাণ্ডা ধরেছেন।”

নিতান্ত সাদামাটা ছাপোষা বলেই বিধায়ক হয়েও তিনি মন জয় করেছিলেন অগুনতি মানুষের। বিধায়ক হওয়ার পর নিজের প্রাপ্য বেতনের অঙ্ক শুনে রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছিল শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনার। TV9 বাংলার প্রতিনিধির থেকেই তিনি জানতে চেয়েছিলেন বেতনের সেই টাকা কী করবেন! সেই শালতোড়ার গৃহবধূই জড়িয়ে পড়েন চরম বিতর্কে। না, রাজনৈতিক বিতর্ক নয়, ব্যক্তিগত বিতর্ক। চন্দনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি নিজের স্বামী-সন্তানকে ছেড়ে গাড়ির চালককে বিয়ে করে নিয়েছেন। শুরু হয় তুমুল হইচই।

সূত্রের খবর, বিয়ের রাতে চন্দনা কৃষ্ণ কুণ্ডু নামক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে সেরে সটান থানায় পৌঁছন নিজের নতুন স্বামীকে নিয়ে। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে বেরিয়েও যান। কিন্তু পুরো সময়টাই নিজের মুখ ঢেকে রাখেন। এমনকী এও অভিযোগ, গত কয়েকমাস ধরেই ড্রাইভারের সঙ্গে তাঁর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তারপরেই বিধায়ক ও তাঁর ‘নতুন স্বামী’র বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কৃষ্ণ কুণ্ডুর স্ত্রী রুম্পা।

যদিও চন্দনা দাবি করেন যে বিরোধীরা তাঁর নামে কুৎসা ছড়ানোর জন্যই এসব করছে। এর আগেও বিরোধীরা তাঁর নামে কুৎসা ছড়িয়েছে বলে দাবি করেন বিধায়ক। বিজেপি নেতৃত্বও গোটা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়। রাজ্য বিজেপি সহ-সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যও চন্দনার সুরেই সুর মিলিয়ে জানিয়ে দেন চন্দনার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। আরও পড়ুন: বেতনের টাকা বিলিয়ে দেবেন? খুন্তি নাড়তে নাড়তে বিধায়ক চন্দনা বললেন…