‘অনুমতি’ ৪ তলার, উঠছে ৫ তলা! ‘স্ক্যানারে’ পুরসভার ভূমিকা, বড় নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট

Calcutta High Court: বাঁকুড়ার সোনামুখী পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সোনামুখী কলেজ সংলগ্ন এলাকায় গৌতম চক্রবর্তী ও অলোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ৩২ কাঠা জমি ছিল। সূত্রের খবর, জগদ্ধাত্রী কনস্ট্রাকশান নামের একটি নির্মাণ সংস্থা ওই জমির উপর ফ্ল্যাট তৈরির জন্য জমির দুই মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে।

‘অনুমতি’ ৪ তলার, উঠছে ৫ তলা! ‘স্ক্যানারে’ পুরসভার ভূমিকা, বড় নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট
কলকাতা হাইকোর্ট Image Credit source: Getty Images
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 08, 2024 | 2:05 PM

বাঁকুড়া: ফের প্রোমোটার রাজের অভিযোগ উঠল সোনামুখী শহরে। পুরসভার আইনকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চার তলা বিল্ডিংয়ের অনুমতি নিয়ে প্রোমোটার দিব্যি হাঁকিয়ে বসেছিলেন পাঁচ তলা বিল্ডিং। প্রোমোটারের বিরুদ্ধে বেআইনি নির্মাণ ও আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ তুলে জমির মালিক পক্ষ দ্বারস্থ হয়েছিল আদালতের। আদালত সবদিক খতিয়ে দেখে পুরসভাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনা সামনে আসতেই জেলার রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে বিতর্ক।  

বাঁকুড়ার সোনামুখী পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সোনামুখী কলেজ সংলগ্ন এলাকায় গৌতম চক্রবর্তী ও অলোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ৩২ কাঠা জমি ছিল। সূত্রের খবর, জগদ্ধাত্রী কনস্ট্রাকশান নামের একটি নির্মাণ সংস্থা ওই জমির উপর ফ্ল্যাট তৈরির জন্য জমির দুই মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে। পরে সেখানে একটি পাঁচ তলা বিল্ডিংও তৈরি করে ওই নির্মাণ সংস্থা। এদিকে নির্মাণকাজ চলার সময়ই জমির দুই মালিক প্রথমে সোনামুখী পুরসভায় এবং পরে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ, ওই নির্মাণ সংস্থা সোনামুখী পুরসভা থেকে চার তলা বিল্ডিংয়ের অনুমতি নিয়ে বেআইনিভাবে পাঁচ তলা বিল্ডিং নির্মাণ করেছে। শুধু তাই নয়, জমির মালিক পক্ষের অভিযোগ তাঁদের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণাও করেছে ওই সংস্থা। পুরসভা বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ না করলেও কলকাতা হাইকোর্ট অবিলম্বে অভিযোগ খতিয়ে দেখে সোনামুখী পুরসভাকে দু’মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু পুরসভার একেবারে নাকের ডগায় কীভাবে অনুমতি ছাড়াই নির্মাণ কাজ হয়ে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। 

জমির মালিক পক্ষের দাবি, নির্মাণকারী সংস্থাটি যথেষ্ট প্রভাবশালী। সেই প্রভাব খাটিয়েই চার তলা বিল্ডিংয়ের অনুমতি নিয়ে দিব্যি পাঁচ তলা বিল্ডিং এর নির্মাণ করেছে। অন্যদিকে নির্মাণকারী সংস্থার মালিকের দাবি, আবাসন নির্মাণের আগেই তিনি সাত তলা বিল্ডিং তৈরির অনুমতি চেয়ে পুরসভায় আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু, সে সময় পুরসভার সর্বাধিক চারতলা বিল্ডিংয়ের অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা ছিল। তাই চারতলা বিল্ডিংয়ের অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি বিল্ডিং প্ল্যান-সহ অন্যান্য নথি খতিয়ে দেখে পুরসভা স্পষ্টতই জানিয়েছিল ৭ তলা পর্যন্ত নির্মাণের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। সেই নথির ভিত্তিতেই  পাঁচ তলা বিল্ডিং তৈরি করা হয়েছে। 

অন্যদিকে জমির মালিকদের তোলা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছে নির্মাণকারী সংস্থাটি।  আদালতের লিখিত নির্দেশ এখনও না মিললেও পুরসভার তরফে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। পুরসভার দাবি, বিষয়টি আদালতে গড়ানোর কারণে তাঁরা এতদিন হস্তক্ষেপ করেননি। এবার আদালতের নির্দেশ মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে। বিজেপি অবশ্য বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে পুরসভার এই মৌনতাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বিজেপির দাবি, পুর কর্তাদের সঙ্গে নির্মাণকারী সংস্থার লেনদেনের ভিত্তিতেই এই বেআইনি নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।