বাঁকুড়া: মিড ডে মিলে বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্র। কিন্তু চড়া এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে সঙ্কট কাটল না। এ রাজ্যে চলা আর ৫টা প্রকল্পের মতোই এ ক্ষেত্রেও শুরু হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর। কিন্তু, অভিভাবকদের অভিযোগ, এরই মাঝে স্কুলে গিয়ে পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ছোট ছোট শিশুরা।
স্কুল ছুটের সংখ্যা কমাতে ২০০৬ সালে সারা দেশের স্কুলগুলিতে চালু হয় মিড ডে মিল প্রকল্প। এই প্রকল্পে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিশুরা স্কুলে পুষ্টিকর খাবার পায়। ছুটির দিন বাদে সপ্তাহের প্রতিটা দিনেই সরকার নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী স্কুলের শিশুদের খাবার দেওয়া হয়। কিন্তু এই মিড ডে মিল বাবদ যে বরাদ্দ রয়েছে তা দিয়ে শিশুদের মুখে পুষ্টিকর খাবার তুলে দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে রাজ্যের স্কুলগুলিকে। নিয়ম অনুযায়ী এই মিড ডে মিলের বরাদ্দের ৬০ শতাংশ দেয় কেন্দ্র, ৪০ শতাংশ দেয় রাজ্য। দুই সরকার মিলিয়ে এ রাজ্যের স্কুলগুলিতে প্রাথমিকের জন্য বরাদ্দ ছিল মাথাপিছু ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। উচ্চ প্রাথমিকের জন্য বরাদ্দ ছিল মাথাপিছু ৮ টাকা ১২ পয়সা।
বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার দু’টি ক্ষেত্রেই বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে। প্রাথমিকের ক্ষেত্রে মাথাপিছু ৭৪ পয়সা বরাদ্দ বৃদ্ধি করে তা করা হয়েছে ৬ টাকা ১৯ পয়সা। অন্যদিকে উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রে মাথাপিছু ১ টাকা ১২ পয়সা বরাদ্দ বৃদ্ধি করে করা হয়েছে ৯ টাকা ২৯ পয়সা। কিন্তু, এই বরাদ্দ বৃদ্ধির পরেও চড়া দ্রব্যমূল্যের এই বাজারে পরিস্থিতির যে বিশেষ বদল হবে না তা বলাই বাহুল্য। শিক্ষকদের দাবি, চাল সরকার সরবরাহ করলেও জ্বালানি থেকে ডাল, আলু, ডিম, সবজি, সয়াবিন, মশলা, তেল সবকিছুই কিনতে হয় স্কুলগুলিকে। বাজারে প্রতি পিস ডিমের দাম ৭ টাকা, আলু কিলো প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, অগ্নিমূল্য সবজী, পাল্লা দিয়ে দাম বেড়েছে তেল, মশলা ও জ্বালানীর। সামান্য ওই বরাদ্দে কোনোভাবেই মিড ডে মিলে যথাযথ পুষ্টিগুণ বজায় রাখা সম্ভব নয়।
মিড ডে মিল এর এই বরাদ্দ বা বরাদ্দ বৃদ্ধি নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার এর জন্য দায় ঠেলছেন রাজ্যের দিকেই। তাঁর দাবি, রাজ্য তাদের শেয়ার যথাযথ ভাবে দিচ্ছে না। মিড ডে মিলেও দুর্নীতি হচ্ছে। তারই শিকার হচ্ছে রাজ্যের সাধারণ পড়ুয়ারা। পাল্টা এই ঘটনার জন্য কেন্দ্রকে দূষছে তৃণমূল। তৃনমূলের দাবি, কেন্দ্র আর পাঁচটা প্রকল্পের মতো এই প্রকল্পেও বঞ্চনা করছে। সামান্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করে সাধারণ মানুষকে আসলে ধোঁকা দিচ্ছে কেন্দ্র। এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামবে রাজ্যের শিক্ষক ও অভিভাবকরা।