বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার বড়জোড়া, বেলিয়াতোড় ও সোনামুখী রেঞ্জের বিভিন্ন জঙ্গলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় ৮০টি হাতি। হাতির হানায় মাঝেমধ্যেই ওই সব এলাকায় ঘটছে দুর্ঘটনা। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলির মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারে তার জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করল বন দফতর। পরীক্ষার্থীদের জন্য ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতেরও ব্যবস্থা করেছে বন দফতর। এর জন্য মোট ১৪টি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতায়াত করতে পারে তার জন্য ইলেকট্রিক ফেন্সিং রয়েছে এমন রুটকেই চিহ্নিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র সেই রুট ধরেই পরীক্ষার্থীদের নিয়ে গাড়িগুলির যাতায়াতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। হাতি উপদ্রুত বাঁকুড়ার জঙ্গল লাগোয়া তিনটি পরীক্ষাকেন্দ্রকে বিপদপ্রবণ হিসাবে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে বন দফতর। বড়জোড়া হাইস্কুল, বেলিয়াতোড় হাইস্কুল ও গদারডিহি হাইস্কুল এই তিনটি পরীক্ষাকেন্দ্রে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলি থেকে পরীক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পৌঁছাতে পারে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে বন দফতর। জঙ্গলের রাস্তায়গুলিতে যথেষ্ট সংখ্যক হুলা পার্টি মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি এই প্রথম জঙ্গল লাগোয়া কুড়িটি গ্রাম থেকে সব মিলিয়ে শতাধিক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া আসার ব্যবস্থা করেছে বন দফতর। গাড়়ি করে পরীক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া হবে পরীক্ষাকেন্দ্রে।
এমনিতেই সারা বছর হাতির দলের তাণ্ডব লেগে থাকে বাঁকুড়ার পাবয়া, ডাকাইসিনি, কালপাইনি সহ জঙ্গলঘেরা বিভিন্ন গ্রামে। স্কুল কলেজ থেকে বাজার এমনকি দৈনন্দিন কাজে যাতায়াতের পথে মাঝেমধ্যেই সাধারণ মানুষকে পড়তে হয় হাতির হামলার মুখে। বিভিন্ন সময় একাধিক প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসতে গিয়ে যাতে হাতির হানার মুখে পরীক্ষার্থীদের পড়তে না হয় সে জন্যে বন দফতরের তরফে আয়োজিত এই ব্যবস্থায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে পরীক্ষার্থীদের পরিবার। এমনিতেই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা নিয়ে চিন্তা থাকে পরীক্ষার্থীদের। তার উপর পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতায়াতের পথে হাতির হামলার ভয় থাকলে পরীক্ষা দেওয়াটা আরও কঠিন হয়ে পড়ত। এই পরিস্থিতিতে বন দফতরের নতুন উদ্যোগ আর যাই হোক যাতায়াতের দুশ্চিন্তা দূর করেছে বলে দাবি পরীক্ষার্থীদেরও।