
বাঁকুড়া: বাঘিনী জিনাতকে ধরতে গোটা জঙ্গল ঘিরে ফেলা হল উঁচু নাইলনের জালে। জালের ধারে ধারে প্রস্তুত রয়েছেন বন কর্মীদের। রেডিও কলার ট্র্যাকিং ডিভাইস দিয়ে বাঘের আসল লোকেশান ট্র্যাক করছেন বন কর্মীরা। একের পর ওক খাঁচা পৌঁছাচ্ছে গোসাইডিহি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে। টোপ হিসাবে ব্যবহার করার জন্য আনা হল ২ টি মহিষ। সবমিলিয়ে বাঘিনিকে ধরতে আজ নজিরবিহীন তৎপরতা চোখে পড়ছে গোসাইডিহি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে। কুমারী নদী পেরোলেই রানীবাঁধ ঝিলিমিলির গভীর জঙ্গল, সেই পথেই কী ফেরার রাস্তা ধরবে বাঘিনি নাকি তার আগেই বন দফতরের পাতা ফাঁদে পা দেবে বাঘিনি? লাখ টাকার প্রশ্ন এখন এটাই।
মাঝে শুধু কুমারী নদী। এই নদী পেরোলেই গোসাইডিহির জঙ্গল থেকে বাঘিনি অনায়াসে ঢুকে পড়তে পারবে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ও ঝিলিমিলির গভীর জঙ্গলে। যে জঙ্গলের অদূরেই রয়েছে বেলপাহাড়ি, কাঁকড়াঝোড় ও ময়ুরঝর্ণার জঙ্গল। বন কর্তাদের মতে বাঘিনীর পক্ষে কুমারী নদী পার হওয়া অসম্ভব কিছু নয়। এমনিতেই শীতে নদীতে স্রোত বেশ কম। তাছাড়া সাঁতার দিতে বেশ পটু বাঘ। স্বাভাবিকভাবে কুমারী নদী পার হয়ে শেষ পর্যন্ত কী বাঘিনি বেলপাহাড়ি, ময়ুরঝর্ণা ও কাঁকড়াঝোড়ের পথ ধরবে নাকি আজই বন দফতরের পাতা ফাঁদে পা দেবে বাঘিনি সেই অপেক্ষাতেই গোটা এলাকার মানুষ।
এদিকে পর্যটনের ভরা মরসুমে গিজগিজ করছে মুকুটমণিপুর জলাধার। এদিকে জলাধারের অপর পারেই ঘাপটি মেরে রয়েছে জিনাত। আতঙ্ক ছড়িয়েছে পর্যটকদের মধ্যেও। শীত পড়লেই মুকুটমনিপুর জলাধারে ভিড় জমান পর্যটকেরা। এবারও তার অন্যথা হয়নি। ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পিকনিকের ভরা মরসুমে তিল ধারণের জায়গা নেই মুকুটমণিপুরে। কিন্তু, এই মুকুটমনিপুর জলাধারেরই অপর পাড়ে গোপালপুরের জঙ্গলে ঘাটি গেড়ে রয়েছে বাঘিনি জিনাত। স্বাভাবিকভাবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে পর্যটকদের মধ্যেও। দূর দূরান্ত থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা এক বুক ভয় নিয়েই এখন পিকনিকে মজেছেন। ভয়ে ভয়ে চলছে নৌকাবিহারও। ভিড়ে গিজগিজ করতে থাকা মুকুটমনিপুর জলাধারে বাঘ যাতে কোনওভাবে প্রবেশ করতে না পারে তার সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে বন দফতর।