Bankura: কচি-কাঁচাদের ‘হৃদমাঝারে’ প্রধান শিক্ষক, আবদার শুনে বদলালেন বাড়ির কাছে বদলির সিদ্ধান্ত

Bankura: সকলে মিলে আবদার করেছিল প্রধান শিক্ষকের কাছে। তিনি যেন স্কুল ছেড়ে না যান। শেষ পর্যন্ত স্নেহের কচি-কাচাদের আবদার ফেরাতে পারলেন না তিনি।

Bankura: কচি-কাঁচাদের 'হৃদমাঝারে' প্রধান শিক্ষক, আবদার শুনে বদলালেন বাড়ির কাছে বদলির সিদ্ধান্ত
প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন গোস্বামী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 02, 2022 | 5:40 PM

বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার (Bankura) সিমলাপাল ব্লকে মাচাতোড়া ইউনিয়ন হাইস্কুল। সেখানে প্রধান শিক্ষক (Head Master) মনোরঞ্জন গোস্বামী। সকলের প্রিয়। পড়ুয়া, অভিভাবক থেকে শুরু করে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক… সবাই তাঁকে যেমন শ্রদ্ধা করেন, তেমনই ভালবাসেন। সেই প্রধান শিক্ষক বদলি হয়ে চলে যাচ্ছিলেন অন্য স্কুলে। পুজোর ছুটি চলাকালীনই সেই খবর কানে গিয়েছিল পড়ুয়াদের। প্রিয় স্যর আর আসবেন না স্কুলে, এই বিষয়টাই যেন তারা কিছুতে মেনে নিতে পারছিল না। তাই সকলে মিলে আবদার করেছিল প্রধান শিক্ষকের কাছে। তিনি যেন স্কুল ছেড়ে না যান। শেষ পর্যন্ত স্নেহের কচি-কাঁচাদের আবদার ফেরাতে পারলেন না তিনি। বাড়ির কাছের স্কুলে বদলি পেয়েও শেষ অবধি সেই পুরনো স্কুলেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন মনোরঞ্জন বাবু।

জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন এই স্কুলে স্থায়ী প্রধান শিক্ষক ছিলেন না। শেষে ২০১৬ সালে বাঁকুড়ার এই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মনোরঞ্জন গোস্বামী। তিনি স্কুলের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ভোল বদলে যায় স্কুলে। পঠন পাঠনের পরিবেশে আমূল বদল আসে। শুরু হয়ে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ড। তাঁর উদ্যোগেই স্কুল চত্বরে তৈরি হয় একটি বাগান। সব মিলিয়ে পড়ুয়াদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় হেডমাস্টার মনোরঞ্জন বাবু। কিন্তু তাঁরও এখন বয়স হয়েছে অনেকটা। ৫৬ বছর বয়সী মনোরঞ্জনবাবুর বাড়ি খাতড়ায়। সেখান থেকে স্কুল প্রায় ২৪ কিলোমিটার দূরে। এই লম্বা রাস্তা নিত্যদিন বাইক নিয়ে যাতায়াত করতে হয় তাঁকে। ধকলও পড়ছিল শরীরে এসবের কারণে।

তাই ভেবেছিলেন, কর্মজীবনের বাকি কয়েকটি বছর বাড়ির কাছাকাছি কোনও স্কুলে শিক্ষকতা করার। সেই মতো উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বাড়ির কাছে বদলি পাওয়ার জন্য আবেদনও জানিয়েছিলেন। বদলি পেয়েও যান তিনি। পুজোর ছুটির মধ্যেই সেই খবর পান। শিক্ষা দফতর তাঁকে রানীবাঁধ ব্লকের পুরানপানি হাইস্কুলে বদলির সুযোগ দেয়। সেটি কিছুটা কাছে মনোরঞ্জনবাবুর বাড়ি থেকে। দশ কিলোমিটার দূরে সেই স্কুল। সেই মতো সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার নিজের পুরনো স্কুলের পরিচালন সমিতিকে ডেকে সমস্ত কিছু বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন মনোরঞ্জন গোস্বামী। আর সেই সময়েই স্কুলের সব কচি-কাঁচা তাঁকে ঘিরে ধরে। প্রিয় হেডমাস্টারকে কিছুতেই স্কুল ছেড়ে যেতে দিতে চায় না ওরা। শেষ পর্যন্ত পড়ুয়াদের আবদার শুনে সিদ্ধান্ত বদলান তিনি। অবসর না নেওয়া পর্যন্ত ওই স্কুলেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মনোরঞ্জন বাবু । পড়ুয়াদের এই ভালবাসায় আপ্লুত প্রধান শিক্ষক। প্রিয় স্যার স্কুলে থেকে যাওয়ায় খুশি পড়ুয়ারাও ।