বাঁকুড়া: দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান। অবশেষে পূর্ব বর্ধমানের মশাগ্রামে যুক্ত হতে চলেছে বিডিআর ও বর্ধমান হাওড়া কর্ড লাইন। এর ফলে বাঁকুড়া থেকে হাওড়ার দূরত্ব এক ধাক্কায় কমবে প্রায় ৪৬ কিলোমিটার। কলকাতার সঙ্গে দূরত্ব কমায় বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার বিস্তীর্ন অংশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো-সহ পর্যটনের ব্যাপক উন্নতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বিগত শতকের গোড়া থেকেই বাঁকুড়া ও বর্ধমান জেলার রায়নার মধ্যে বাঁকুড়া দামোদর রিভার রেলপথ সংক্ষেপে বিডিআর রেলপথ স্থাপন করে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার। ন্যারোগেজ ওই রেলপথ ধরে ছুটতে শুরু করে ট্রেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ওই রেলপথ। কিন্তু বিগত শতকের শেষ কয়েক দশক বিভিন্ন সমস্যা মাথাচাড়া দিতে শুরু করে। তাতেই জর্জরিত হয়ে পড়ে ওই রেলপথ। বাধ্য হয়ে শেষে ১৯৯৫ সালে ওই রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। ওই বছরই ওই রেলপথকে ন্যারোগেজ থেকে ব্রডগেজে রুপান্তরিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। শেষ অবধি ২০০৫ সালে বাঁকুড়া থেকে সোনামুখী পর্যন্ত ওই লাইনে ট্রেন ছুটতে শুরু করে ট্রেন। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে তা মশাগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
এবার সোজা হাওড়া
মশাগ্রাম পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার পাশাপাশি লাইনে বৈদ্যুতিকরণের কাজও সম্পূর্ণ হয়। কিন্তু বিভিন্ন প্রশাসনিক জটিলতার কারণে মশাগ্রামে লাইনটি বর্ধমান হাওড়া কর্ড লাইনের সঙ্গে যুক্ত না হওয়ায় সরাসরি বাঁকুড়া থেকে কলকাতা যাওয়ার ক্ষেত্রে মশাগ্রাম স্টেশনে ট্রেন বদল করতে হতো। কিন্তু এবার মশাগ্রাম স্টেশনে বিডিআর রেলপথের সঙ্গে জুড়তে চলেছে বর্ধমান হাওড়া কর্ড লাইন। এর ফলে বাঁকুড়া থেকে সরাসরি মশাগ্রাম হয়ে হাওড়া ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকছে না।
কমে যাচ্ছে দূরত্ব
রেলের তরফে জানা গিয়েছে ১৪ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত মশাগ্রামে ওই দু’টি লাইন সংযুক্ত করা হবে। এর ফলে বাঁকুড়া ও কলকাতার মধ্যে দূরত্ব কমবে ৪৬ কিমি। বাঁকুড়া থেকে খড়্গপুর হয়ে হাওড়া যেতে যেখানে ২৩১ কিমি পাড়ি দিতে হত সেখানে এই পথে ১৮৫ কিমি পাড়ি দিলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে হাওড়া স্টেশনে। কলকাতার সঙ্গে দূরত্ব এতটা কমে যাওয়া বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো ও পর্যটনের ক্ষেত্রে আমূল বদল আসবে বলে আশা স্থানীয়দের।