
বাঁকুড়া: আবারও বাংলায় বিএলওর মৃত্যু। স্কুলের ক্লাসরুম থেকে এক বিএলও-র (BLO) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ বিধানসভার রাজাকাটা এলাকায়। পেশায় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারাধন মণ্ডল আত্মহত্যা করেছেন বলেই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে সুইসাইড নোট। সংশ্লিষ্ট নোটে শিক্ষক লিখে গিয়েছেন কাজের অত্যাধিক চাপের কথা। আর এই বিষয় জানাজানি হতেই নতুন করে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। খবর পেয়ে রানিবাঁধ থানার পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়েছে। প্রসঙ্গত, এই নিয়ে বাংলায় মোট ছ’জন বিএলও (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী) আত্মহত্যা করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঁকুড়ার রাজাকাটা মাঝেরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন হারাধন। তাঁর কাঁধে পড়েছিল বাঁকুড়ার রানিবাঁধ বিধানসভার ২০৬ নম্বর বুথে বিএলও-র দায়িত্ব। নিজের বুথের কিছু ভোটারের শুনানিতে ডাক পড়ে। সেই ভোটারদের নথিপত্র জোগাড়ের নাম করে এদিন বেলা দশটা নাগাদ নিজের বাড়ি থেকে বের হন ওই বিএলও। দীর্ঘক্ষণ তাঁর খোঁজ না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।
পরে পরিবারের লোকজন তাঁর খোঁজ করতে করতে স্কুলে হাজির হন। দেখেন স্কুলের একটি ক্লাসরুমের সিলিং ফ্যানে গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর দেহ ঝুলছেন হারাধন। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট বলে পরিবার সূত্রে খবর। সংশ্লিষ্ট নোটে লেখা রয়েছে, ‘আমি আর চাপ নিতে পারছি না। বিদায়।‘ একই সঙ্গে ওই নোটে লেখা রয়েছে, ‘এই কাজের জন্য আমিই দায়ী। এর সঙ্গে অন্য কারও যোগ নেই।‘ শেষে লেখা আছে, ‘সব ঠিক করেও আমি ভুল করলাম। ক্ষমা কর আমাকে।‘
পরিবারের দাবি হারাধন মণ্ডল এসআইআর-এর কাজের চাপ নিতে না পেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তার জেরেই এমন ঘটনা। মৃত বিএলওর ছেলে সোহম মণ্ডল বলেন, “বাবা এসআইআর-এর চাপ নিতে পারেনি। তাই সুইসাইড করে নিয়েছে। কী করব? প্রচুর কাজের চাপ। কোনও ট্রেনিং নেই কিছু নেই। আজ বলছে এই কাজ করলে হবে, কাল বলছে ভুল।”