
বাঁকুড়া: রাস্তা বসে পড়ল গোটা গ্রাম। দীর্ঘক্ষণ যানজটের জেরে আটকে গেল একের পর এক গাড়ি। ব্যাপক শোরগোল গোটা এলাকায়। খবর চাউর হতে ততক্ষণে ছুটে আসছেন আশপাশের এলাকার লোকজনও। কিন্তু কী থেকে এত কাণ্ড? কেন এত ক্ষোভ গ্রামবাসীদের? কারণ নাকি মাছি। মাছির আতঙ্কে তটস্থ গোটা এলাকা। এলাকাতেই রয়েছে একাধিক মুরগির হ্যাচারি। সেখান থেকেই লক্ষ লক্ষ মাছি ছড়িয়ে পড়ছে এলাকায়। মাছির উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মাছির কারণেই ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন রোগ। প্রতিবাদে বাঁকুড়া পুরুলিয়া ৬০ এ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন বাঁকুড়া সদর থানার কশিবেদিয়া সহ আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা।
বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকের কশিবেদিয়া এলাকায় ৬০ এ জাতীয় সড়কের ধারে রয়েছে একের পর এক মুরগির হ্যাচারি। সেই হ্যাচারি থেকেই লক্ষ লক্ষ মাছি ছড়িয়ে পড়ছে স্থানীয় কাশিবেদিয়া, পড়্যাশোল, তেঘরি, দলদলি, জগন্নাথপুর, ঘোলগড়িয়া সহ বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লক ও ছাতনা ব্লকের সীমান্তবর্তী এলাকায়। সমস্যা এতটাই বড় আকার নিয়েছে যে গ্রামগুলির মানুষকে এখন দিবারাত্রি তাড়া করে বেড়াচ্ছে মাছির আতঙ্ক। খেতে বসলেও ঝেঁকে ধরছে মাছি। বাধ্য হয়ে অনেককে মশারির ভেতর ঢুকে খাবার খেতে হচ্ছে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মাছির কারণেই সম্প্রতি এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ অনেক বেড়ে গিয়েছে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের দাবি, হ্যাচারিগুলিতে নিয়মিত মাছি নাশক স্প্রে করলে এমন অবস্থা হত না। কোনও নজরদারি নেই, তাই এই অবস্থা। তাতেই ক্ষোভে ফুঁসছে গ্রামের পর গ্রাম। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলে শেষ পর্যন্ত অবরোধ উঠে যায়। একইসঙ্গে হাচারি কর্তৃপক্ষের তরফে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়ে গিয়েছে চাপানউতোর। বিজেপির দাবি, শাসকদলের নেতারা নিয়মিত হ্যাচারিগুলি থেকে কাটমানি নিয়ে এলাকার মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য বিকাশ ঘোষ। যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল। তৃণমূল নেতা তথা বাঁকুড়া এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি হ্যাচারি কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের ব্যাপারে কড়া নির্দেশ দেওয়া হবে।