বাঁকুড়া : প্রথম স্ত্রী ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছিল। কিছুদিন পর ফিরে আসে প্রথম স্ত্রী। দুই সতীনের মধ্যে বাধে ঝামেলা। সেই বিবাদ ক্রমশ বাড়তে থাকে। তারই জেরে দ্বিতীয় স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে স্বামী ও তার প্রথম স্ত্রীর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় দোষীসাব্যস্ত দম্পতিকে আজ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (Life imprisonment) নির্দেশ দিলেন বাঁকুড়া জেলা আদালতের চতুর্থ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়। সাজাপ্রাপ্ত ওই দম্পতির নাম হারু বাউড়ি ও পদ্মা বাউড়ি। তাদের বাড়ি বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানার ভাড়াডিহি গ্রামে।
পেশায় কৃষক হারুর সঙ্গে ২০১১ সালে বিয়ে হয় পদ্মার। ২০১৫ সালে পদ্মা স্বামীকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। ওই বছরই রিনা বাউড়িকে বিয়ে করে হারু। দ্বিতীয় বিয়ের কিছুদিন পর হারুর বাড়িতে ফিরে আসে প্রথম স্ত্রী পদ্মা। তারপর থেকেই দুই সতীনের বিবাদ শুরু হয়। আর ওই বিবাদের জেরেই দ্বিতীয় স্ত্রীকে খুনের পরিকল্পনা করে হারু ও তার প্রথম স্ত্রী।
কী ঘটেছিল ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর-
সরকারি আইনজীবী অরুণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর রিনা বাড়িতে বসে টিভি দেখছিলেন। সেই সময় হারু ও পদ্মা রিনার শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। বাড়ির দরজা বন্ধ করে দেয়। স্থানীয়রা গুরুতর জখম অবস্থায় পদ্মাকে উদ্ধার করে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান। চারদিন পর মারা যান রিনা। মৃত্যুর আগে ঘটনার কথা জানিয়ে যান তিনি। এরপরই রিনার পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে হারু ও পদ্মাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর মোট ১৮ জন সাক্ষী ও মৃতার মৃত্যুকালীন জবানবন্দীর ভিত্তিতে হারু ও পদ্মাকে গতকাল দোষীসাব্যস্ত করে আদালত। আজ দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক।