
বাঁকুড়া: ব্লক যুব তৃণমূলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে রাতারাতি বাদ একের পর এক ব্লক তৃণমূলের নেতা। বাদ দেওয়া হয়েছে যুব সংগঠনের ব্লক সভাপতিকেও। তাতেই জোর শোরগোল জেলার রাজনৈতিক মহলে। ক্ষোভ বাড়ছে ঘাসফুল শিবিরের অন্দরেই। দলের ব্লক সভাপতির নির্দেশেই এই কাজ হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন বাদ পড়া তৃণমূল নেতারা। যদিও বিষয়টিকে নিছকই যান্ত্রিক গোলযোগ বলে সাফাই দিয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি।
বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের তৃণমূলের যুব সংগঠনের নিজস্ব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে স্থানীয় ও ব্লক যুব তৃণমূল নেতৃত্ব ছাড়াও এতদিন ছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি থেকে ব্লক নেতৃত্বরা। ওই গ্রুপে সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচি ছাড়াও দলের সাংগঠনিক স্তরের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হত। দলের উচ্চ নেতৃত্বের তরফে পাওয়া বিভিন্ন নির্দেশিকাও এই গ্রুপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হত অন্যান্যদের কাছে। সূত্রের খবর, সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে শনিবার আচমকাই বাদ পড়তে শুরু করে একের পর এক তৃণমূল নেতা। অভিযোগ গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হয় খোদ যুব তৃণমূলের রানিবাঁধ ব্লক সভাপতিকেও। এই ঘটনা সামনে আসতেই রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে রানীবাঁধের শাসকদলের অন্দরে। ফের প্রকাশ্যে গোষ্ঠী কোন্দল।
হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বাদ পড়া তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, দলের ব্লক সভাপতি চিত্ত মাহাতোর নির্দেশে এক তৃণমূল নেতা এই কাণ্ড করেছে। বিক্ষুব্ধদের দাবি, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি গ্রুপকে পৈতৃক সম্পত্তি হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছেন। তারই ফল এই ঘটনা। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি চিত্ত মাহাতো যদিও সেই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর সাফাই, যান্ত্রিক গোলযোগের কারনেই এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা জানা নেই বলে বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি।
গ্রুপ থেকে বহিস্কৃত নেতা উত্তম কুম্ভকার, “আমাকেও বের করে দেওয়া হয়েছে। কেন বের করা হয়েছে তা এখনও জানানো হয়নি। শুধু আমি একা নই, ব্লকের যুব সভাপতিকেও বের করে দেওয়া হয়েছে। আইএনটিটিইউসি সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি সহ বেশ কিছু লোকজনকে বের করে দেওয়া হয়েছে।” এরপরই চিত্ত মাহাতোর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনে তিনি বলেন, “চিত্ত মাহাতোর শ্য়ালকের ছেলে অরূপই চিত্তর সব কাজ দেখাশোনা করেন। আমি মনে করে ব্লক সভাপতির নির্দেশেই এমনটা হয়েছে। উনি মনে হয় দলটাকে নিজের বাপের সম্পত্তি ভেবে নিয়েছেন।” যদিও চিত্ত মাহাতো বলছেন, “ফোনের সমস্যার জন্য এমনটা হয়েছে। ওটা ঠিক হয়ে যেতেই ফের গ্রুপ খুলে সবাইকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সবাই দেখতে পাবে।” তাঁর আরও দাবি, “আটানব্বই সাল থেকে আমি দলটা করছি। আমি কোনওদিন কাউকে উপেক্ষা করি না।” তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তারাশঙ্কর রায় যদিও বলছেন, তিনি পুরো ঘটনা খোঁজ নিয়ে দেখবেন। তাঁর কথায়, “কী হয়েছে সবটা জেনে তারপরই কথা বলব। তবে আমি চাই সবাই দলবেঁধে একযোগে চলতে হবে। সে কথা আমি ব্লক সভাপতিকেও বলে দেব।”