বাঁকুড়া: সরকারি প্রকল্প ধাক্কা খেল বাঁকুড়ায়। মুখ্যমন্ত্রী নিজশ্রী প্রকল্পে উপভোক্তাদের বড় অংশ টাকা দিয়েও মিলছে না ফ্ল্যাট। উঠছে অভিযোগ।
বাঁকুড়ার ঘটনা। অভিযোগ সরকার নির্ধারিত দামের একটা বড় অংশ দেওয়া হয়ে গেলেও আবাসন দফতর সেই ফ্ল্যাট এখনো উপভোক্তাদের হস্তান্তর না করায় ক্ষোভ বাড়ছে উপভোক্তাদের মধ্যে। অপরদিকে, আবাসন দফতরের দাবি সমস্ত উপভোক্তা নির্ধারিত টাকা না দেওয়াতেই হস্তান্তরে দেরী হচ্ছে।
২০২০ সালে সারা রাজ্যের শহরাঞ্চলের গৃহহীনদের মাথার উপর ছাদ তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ঘোষণা করা হয়েছিল নিজশ্রী প্রকল্পের। এই প্রকল্পে বাঁকুড়া শহরে মোট ৬৪ টি ফ্ল্যাট তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের নজরদারিতে আবাসন দফতর ঠিকাদারের মাধ্যমে ওই ফ্ল্যাটগুলি তৈরির কাজ শুরু করে। লটারির মাধ্যমে ৬৪ জন উপভোক্তা নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসন।
উপভোক্তারা ফ্ল্যাটের দাম বাবদ নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী দফায়-দফায় টাকা দিতে শুরু করেন। প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের শেষেই উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ফ্ল্যাটগুলি। কিন্তু বছর ঘুরতে চললেও এখনও সেই ফ্ল্যাটগুলির হস্তান্তর করেনি প্রশাসন এমনটাই দাবি উপভোক্তাদের। এর ফলে যে উপভোক্তারা ফ্ল্যাট নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন ক্ষোভে ফুঁসছেন তাঁরা।
তাঁদের দাবি ফ্ল্যাট নেওয়ার জন্য তাঁরা বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী টাকা দিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে প্রশাসনিক টালবাহানায় সময়মতো ফ্ল্যাট হাতে না পাওয়ায় দিনের পর দিন বাড়ি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে ফ্ল্যাটগুলি উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন উপভোক্তারা। আবাসন দফতরের দাবি উপভোক্তাদের একাংশ সময়মতো টাকা জমা না করায় বরাত পাওয়া ঠিকা সংস্থাকে টাকা মেটানো যায়নি। এর ফলে ওই আবাসন নির্মানের ২০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে। উপভোক্তারা টাকা মিটিয়ে দিলেই আগামী দু’মাসের মধ্যে আবাসন তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে।
এক উপভোক্তা বলেন, ‘৬৪টি পরিবার প্রায় এই ফ্ল্যাটের আওতায় পড়ে। প্রচুর মানুষ ইনস্টলমেন্টে সেই সংক্রান্ত টাকা জমাও করে দিয়েছেন। আর অল্প কিছু টাকা বাকি। তা সত্বেও প্রশাসনের উদাসীনতার জন্য আমরা বুঝতে পারছি না মাথার উপর ছাদ কবে উঠবে।’ অপরদিকে, এই বিষয়ে দীনেশ চন্দ্র বাউরী, আবাসন দফতরের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র বলেন, ‘রাজ্যের মধ্যে একটা মাত্র জেলাতেই সরকারি আবাসনের বাড়ি হস্তান্তরিত হয়েছে। তা পশ্চিম মেদিনীপুরে। আর বাঁকুড়ায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি শেষ হলেই প্রকল্প হস্তান্তরিত করা হবে।’