
বাঁকুড়া: কলেজে কলেজে ড্রপ আউটের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকায় যখন ক্রমশ চওড়া হচ্ছে চিন্তার ভাঁজ, ঠিক সেই সময় চিন্তা বাড়ছে ইঞ্জিনিয়রিং কলেজগুলিকে নিয়েও। ওবিসি জটে আটকে রয়েছে রাজ্যের সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া। ফলে চূড়ান্ত দিশাহীনতার মধ্যে দিন কাটছে রাজ্যের মধ্যবিত্ত, গরিব মেধাবী পড়ুয়াদের। রাজ্যের সরকারি নামী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতেও আসন সংখ্যা পূরণ হবে কিনা তা নিয়ে দেখা যাচ্ছে সিঁদুরে মেঘ।
শিক্ষামহলের বড় অংশের মতে, এ রাজ্যে বিভিন্ন সরকারি চাকরির সুযোগ সঙ্কুচিত হতে থাকায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার ঝোঁক বেড়েছে পড়ুয়াদের মধ্যে। রাজ্যে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আসন সংখ্যাও। কিন্তু, এবার সেখানেও দেখা দিল জটিলতা। যথাসময়ে পরীক্ষা হলেও ওবিসি জটে এখনও ফল প্রকাশ হয়নি রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার। ফলে থমকে রয়েছে রাজ্যের সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া। যে সব পড়ুয়ার পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা রয়েছে তারা অনেকেই ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্টের ভরসা না করে জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেইন পরীক্ষার ভিত্তিতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ভর্তি হচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে। কিন্তু যে সমস্ত মধ্যবিত্ত ও গরিব মেধাবী পড়ুয়াদের একমাত্র ভরসা সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ তারা ভূগছে চূড়ান্ত দিশাহীনতায়।
অন্যদিকে ইতিমধ্যেই বহু পড়ুয়া ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্টের ভরসায় না থেকে বেসরকারি কলেজগুলিতে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন। এর মধ্যে রাজ্যের নামী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলেও সেগুলির বরাদ্দ আসন ভরবে কিনা তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়। শিক্ষকদের বড় অংশ বলছেন, এই জটে শুধু একটি প্রজন্মের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের পিছিয়ে দেওয়া হল তাই নয়, এই ধরনের জটিলতায় ধীরে ধীরে দিশাহীনতার অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে আগামীর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ারাও।
উদ্বেগ প্রকাশ করছেন শিক্ষক চিন্ময় মুখোপাধ্যায়। বলছেন, “কলেজে তো জুন মাসে সেমিস্টার হওয়ার কথা। কিন্তু এখনও তো ক্লাসই শুরু হল না। দ্রুত এর সমাধান হওয়া উচিত। দ্রুত রেজাল্ট বের করে ভর্তি শুরু করে দেওয়া হোক।” উদ্বেগের সুর ছাত্রদের গলাতেও। এবার জয়েন্ট দিয়েছেন অংশু সেনাপতি। রেজাল্টের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে সেও। গলায় একরাশ উদ্বেগ নিয়ে বলছে, “অসুবিধা তো খুবই হচ্ছে। এর জন্য তো ভবিষ্যতেও অসুবিধা হবে। এখন যত তাড়াতাড়ি রেজাল্ট বের হবে ততই আমাদের সুবিধা।”