বাঁকুড়া: একজন বিজেপি-র, অপরজন সিপিএম-এর। গত গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে দু’জন দুই দলের হয়ে জিতলেও পরে যোগ দেন তৃণমূলে। কিন্তু শাসক শিবিরের চওড়া সেই হাসি বেশিদিন দীর্ঘস্থায়ী হল না। তৃণমূলে যোগ দিয়েও নিজের নিজের ঘরে ফিরলেন বিজেপি ও সিপিএম-এর দুই পঞ্চায়েত সদস্য। ভয় দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল। দাবি দুই দলের।
বাঁকুড়ার খাতড়া ব্লকের দহলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। সেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচন ও পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের পরেও দল বদলের রাজনীতি অব্যাহত। দহলা গ্রাম পঞ্চায়েতের শিকরাবাইদ গ্রাম সংসদ থেকে জয়ী হন বিজেপি সদস্য ভগবত দুলে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি দলবদল করে যোগ দেন তৃণমূলে। এরপর গত ২১ সেপ্টেম্বর ওই পঞ্চায়েতেরই ভেদুয়া বুথ থেকে সিপিএম-এর জয়ী সদস্য লক্ষ্মীপ্রিয়া রায় যোগ দেন তৃণমূলে। রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির হাত ধরে ঘাসফুলের পতাকা কাঁধে তোলেন তিনি। যোগদানের সময় মন্ত্রী দাবি করেছিলেন এলাকার উন্নয়নের স্বার্থেই তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
কিন্তু সেই যোগদানের সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই দুই পঞ্চায়েত জয়ী সদস্যই ফিরে যায় নিজের-নিজের শিবিরে। আর নিজের ঘরে ফিরেই দু’জনই দাবি করলেন ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। সিপিএম ও বিজেপি নেতৃত্বও সেই একই দাবি করেছেন। যদিও তৃণমূল সেই অভিযোগ মানতে চায়নি। উল্টে তাদের দাবি ওই দুই সদস্য যোগদানের পর সিপিএম ও বিজেপি ভয় দেখিয়ে ওই দুই পঞ্চায়েত সদস্যকে ফের নিজেদের দলে টেনেছে। তবে তাঁদের সেই দলে ফেরা বেশিদিন স্থায়ী হবে না। আবার তাঁরা তৃণমূলেই আসবেন।
দহলা গ্রাম পঞ্চায়েত জয়ী সিপিএম সদস্য লক্ষ্মীপ্রিয়া রায় বলেন,”তৃণমূলের সঙ্গে থাকলেও আমার গ্রামে উন্নয়ন হবে। না থাকলেও হবে। সেটা আমি পরে বুঝতে পেরেছি। তাই ফিরে এসেছি।” তৃণমূল নেতা শ্যামল সাঁতরা বলেন, “তৃণমূল খারাপ অবস্থায় নেই যে জোর করে কাউকে তুলে আমাদের দলে নিয়ে আসতে হবে। যেখানে বোর্ড গঠনের জন্য অন্য় কোনও দলের প্রয়োজন হয়নি সেখানে কেন জোর করতে যাব?”
উল্লেখ্য়, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকে লাগাতার হিংসার খবর উঠে এসেছে। ভোটের রেজাল্ট বের হওয়ার পর এক শিবির থেকে অন্য শিবিরে ঝাঁপাঝাঁপি ছিল অব্যাহত। শুধু বাঁকুড়া নয়, নির্বাচনের রেজাল্ট বেরনোর দিনই পূর্ব বর্ধমানের কালনায় জয়ী সিপিএম প্রার্থী যোগ দেন তৃণমূল। পরে জানা যায়, তাঁর সন্তানকে অপরহরণ করা হয়েছে। সেই ভয়ে তিনি যোগ দিয়েছেন তৃণমূল। যদিও, শাসক শিবির ঘটনার দায় অস্বীকার করে।