Bankura School: তৃণমূল নেতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্কুলের ৫২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, অভিভাবকদের হাতে স্কুলেই আটক প্রধান শিক্ষক

Hirak Mukherjee | Edited By: জয়দীপ দাস

Mar 19, 2025 | 9:53 AM

Bankura School: প্রসঙ্গত, পড়ুয়াদের সংখ্যার বিচারে বাঁকুড়া জেলার বড় স্কুলগুলির মধ্যে অন্যতম বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের মগরা হাইস্কুল। এই স্কুলে বিভিন্ন বেনিয়মের অভিযোগ তুলে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা।

Bankura School: তৃণমূল নেতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্কুলের ৫২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, অভিভাবকদের হাতে স্কুলেই আটক প্রধান শিক্ষক
স্কুলে বিক্ষোভ অভিভাবকদের
Image Credit source: TV 9 Bangla

Follow Us

বাঁকুড়া: স্কুল উন্নয়নের ৫২ লক্ষ টাকা লোপাটের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ অভিভাবকদের। পরিচালন সমিতির দায়িত্বে থাকা তৃণমূলের যুব নেতার সঙ্গে যোগসাজসেরও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাপানউতোর বাঁকুড়ার রাজনৈতিক মহলে। স্কুলেই প্রবল বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন অভিভাবকেরা। এই অভিযোগকে সামনে রেখে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত স্কুলেই প্রধান শিক্ষককে আটকে রাখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে। চাপানউতোরের মধ্যেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস এসেছে স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে। 

প্রসঙ্গত, পড়ুয়াদের সংখ্যার বিচারে বাঁকুড়া জেলার বড় স্কুলগুলির মধ্যে অন্যতম বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের মগরা হাইস্কুল। এই স্কুলে বিভিন্ন বেনিয়মের অভিযোগ তুলে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা। এবার স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে থাকা ব্লকের তৃণমূল যুব নেতা বুদ্ধদেব শর্মার সঙ্গে যোগসাজস করে স্কুলের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুকেশ পাত্রর বিরুদ্ধে। স্থানীয় অভিভাবকদের দাবি, ২০১৯ সাল থেকে ধাপে ধাপে স্কুলের নতুন ক্লাসরুম তৈরি,সীমানা পাঁচিল নির্মাণ ও পুরানো ভবন সংস্কারের জন্য মোট ৫২ লক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছে স্কুলটি। অভিভাবকদের অভিযোগ, সেই টাকায় স্কুলের কোনও কাজ না করে পরিচালন সমিতির সঙ্গে যোগসাজস করে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাত করে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক মুকেশ পাত্র। 

টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে রাখতে স্কুলে গত তিনবছর ধরে অডিট না করানোর অভিযোগও তোলেন অভিভাবকেরা। এই অভিযোগ সামনে রেখে মঙ্গলবার বিকালে অভিভাবকেরা একত্রিত হয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে ওই টাকার হিসাব চাইতে যান। প্রধান শিক্ষক সেই হিসাব দেখাতে না পারায় বিকাল ৩ টা থেকে প্রধান শিক্ষক সহ স্কুলের সমস্ত শিক্ষককে ঘেরাও করে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন অভিভাবকেরা। প্রায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত এই বিক্ষোভের জেরে স্কুলেই আটকে থাকেন প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকেরা। ঘটনার খবর পেয়ে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকেরা। পরে প্রধান শিক্ষক অসুস্থ বোধ করায় অভিভাবকদের বুঝিয়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে পুলিশ। 

তবে বিতর্কের মুখে সাফাইও দিতে দেখা গিয়েছে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে। তাঁর দাবি, কোনও টাকা আত্মসাৎ করা হয়নি। অনুদানের সমস্ত টাকাই স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে। শারীরিক অসুস্থতা ও পারিবারিক সমস্যার কারণেই তিনি ওই টাকা খরচ করতে পারেননি।  দ্রুত টেন্ডার করে ওই টাকায় কাজ শুরু করা হবে। বাঁকুড়ার জেলা স্কুল পরিদর্শকের দাবি, ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় স্কুলটিকে ৫৪ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছিল। বারেবারে স্কুলকে সেই টাকা খরচ করার কথা বলা হলেও স্কুল সেই টাকা খরচ করেনি। সেই টাকা কোথায় আছে তা খতিয়ে দেখে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

পরিচালন সমিতির সভাপতির দায়িত্বে থাকা বাঁকুড়া দু’নম্বর ব্লকের তৃণমূলের যুব সভাপতি বুদ্ধদেব শর্মার নাম জড়ানোয় বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দাবি অভিভাবকদের অভিযোগ সত্য। অবিলম্বে ওই প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সভাপতিকে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। তৃনমূল অবশ্য গোটা ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রই দেখছে।