
বাঁকুড়া: ফের বাঁকুড়া জেলা আদালতে পেশ করা হল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া শিক্ষিকা জেসমিন খাতুনকে। বাঁকুড়া জেলা আদালতে পেশ করা হল ওই কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত শিক্ষাকর্তা অলোক কুমার সরকারকেও। কিন্তু এখনও অধরা এই কাণ্ডের অন্যতম নায়ক স্কুল সার্ভিস কমিশনের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান শেখ সিরাজুদ্দিন। কেন এখনও অধরা সিরাজুদ্দিন? কোথাও কী তাঁকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে? প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল জোনের চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাদে নিজের প্রভাব খাটিয়ে স্ত্রী জেসমিন খাতুনকে শিক্ষিকা হিসাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শেখ সিরজুদ্দিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠতেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তদন্ত চলাকালীন গত ২১ ফেব্রুয়ারি সিআইডি গ্রেফতার করে শেখ সিরাজুদ্দিনের স্ত্রী তথা বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের ভতড়া শ্রীদুর্গা বিদ্যায়তন হাইস্কুলের সংস্কৃত বিষয়ের শিক্ষিকা জেসমিন খাতুনকে।
২২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সিআইডি আদালতে হাজির করলে ৪ মার্চ ফের তাঁকে আদালতে পেশের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই নির্দেশ মেনে সোমবার জেসমিন খাতুন ও ওই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে যুক্ত প্রাক্তন শিক্ষা কর্তা অলোককুমার সরকার ও শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে পেশ করে সিআইডি। এদিকে এখনও পর্যন্ত এই কাণ্ডের মূল মাথা শেখ সিরাজুদ্দিন অধরা।
সিআইডির দাবি, তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শেখ সিরাজুদ্দিনকে যেখানে সিআইডি-র চোখে ফেরার, সেই তিনিই বহাল তবিয়তে রয়েছেন তা বোঝা যাবে বাঁকুড়ার শালডিহা কলেজে গেলেই। শালডিহা কলেজের নোটিস বোর্ডে একটি নোটিস টাঙানো রয়েছে, যে নোটিস বলে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শেখ সিরাজুদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে কলেজেরই এক অধ্যাপককে লিখিতভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিচ্ছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে যে শেখ সিরাজুদ্দিন নোটিসে স্বাক্ষর করছেন তাঁকে কেন খুঁজে পাচ্ছে না সিআইডি, সেই প্রশ্ন তুলছেন এলাকার মানুষ। এলাকার মানুষের দাবি, হয়তো তাঁকে আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রভাবশালীদের আড়াল করার অভিযোগ এনেছেন এই কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অলোককুমার সরকারের আইনজীবীও। স্বামী শেখ সিরাজুদ্দিন কোথায় সে ব্যাপারে বারবার প্রশ্ন করা হলেও, এদিন কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ধৃত শিক্ষিকা জেসমিন খাতুনের। সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, শেখ সিরাজুদ্দিন কেন এখনও অধরা তা বলতে পারবে সিআইডি। তবে তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করেছে আদালত।