বাঁকুড়া: খবরের জের। ১৪ বছরের দীর্ঘ আইনি লড়াই ও শিক্ষা দফতরের টালবাহানার পর মৃত বাবার চাকরি দেওয়ার জন্য রেকমন্ডেশন দেওয়ার আশ্বাস দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। TV9 নাইন বাংলার খবরের জের। অবশেষে প্রভাত কুমার পালকে স্কুলের গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদে রেকমেন্ডেশন চিঠি পাঠানোর আশ্বাস দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে আইনি লড়াইয়ের পর মাস দুই আগে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এক মাসের মধ্যে প্রভাত কুমার পালকে নিয়োগের নির্দেশ দেয়। তারপর দুমাস কেটে গেলেও নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা চলছিল বলে অভিযোগ। টিভি নাইন বাংলায় খবর হতেই নড়েচড়ে বসে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তড়িঘড়ি প্রভাত কুমার পালের নিয়োগের রেকমেন্ডেশন মধ্যশিক্ষা পর্ষদে পাঠানোর ব্যাপারে তৎপরতা শুরু হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সেই রেকমেন্ডেশন পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
বাঁকুড়ার কোতুলপুর ব্লকের মুড়াকাটা গ্রামের বাসিন্দা দুর্গাপদ পাল প্রাথমিক শিক্ষক ছিলেন। গ্রামের প্রান্তেই মুড়াকাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরিরত অবস্থায় ১৯৯৩ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয় তাঁর। তিন কন্যা ও একমাত্র পুত্র নাবালক থাকায় নিয়ম অনুযায়ী, স্বামীর চাকরি পেতে আবেদন জানান স্ত্রী অঞ্জলি পাল। কিন্তু সেই চাকরি পাওয়ার আগেই ২০০০ সালে তাঁর মৃত্যুও হয়।
২০০৮ সালে মৃত দম্পতির একমাত্র পুত্র প্রভাত কুমার পালের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে শিক্ষা দফতরের দ্বারস্থ হয়ে চাকরির আবেদন জানানো হয়। কিন্তু শিক্ষা দফতর চাকরি দিতে টালবাহানা করায় ২০০৯ সালে প্রভাত কুমার পাল হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আইনি লড়াই চালানোর পর চলতি বছরের ৩১ জুলাই শিক্ষা দফতরকে চার সপ্তাহের মধ্যে প্রভাত কুমার পালকে নিয়োগের নির্দেশ দেয়। কিন্তু চার সপ্তাহ কেটে গেলেও শিক্ষা দফতর নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে দাবি প্রভাত কুমার পালের।
এদিকে দীর্ঘ আইনি লড়াই চালাতে গিয়ে পরিবারের সমস্ত সম্পত্তি খুইয়ে কার্যত নিঃস্ব হয়ে পড়া চাকুরি প্রার্থীকে বেছে নিতে হয়েছে অন্যের কাপড়ের দোকানে কর্মচারীর কাজ। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও শিক্ষা দফতর নিয়োগের ব্যাপারে পদক্ষেপ না করায় রীতিমতো হতাশ হয়ে প্রভাত কুমার পাল। আর তারপরই নড়েচড়ে বসে স্কুল সার্ভিস কমিশন। কমিশনের তরফে প্রভাত কুমার পালকে জানানো হয় আগামী বুধবারের মধ্যে রেকমন্ডেশন চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হবে মধ্যশিক্ষা দফতরে।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের এই আস্বাসে আপাতত কিছুটা হলেও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন প্রভাত কুমার পাল।