
বাঁকুড়া: শালী নদীর উপর থাকা জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারাপার করছেন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। যেকোনও মুহূর্তে ঘটতে পারে ভয়ানক দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সব দেখেও নির্বিকার প্রশাসন। বিষয়টি বিডিও-র নজরে আছে দাবি পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের। তবে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। প্রশাসনকে তীব্র কটাক্ষ বিজেপি বিধায়কের। তা নিয়েই সরগরম এলাকার রাজনৈতিক মহল। একইসঙ্গে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে।
বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়ের ব্লকের হামিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খোসালপুর গ্রাম সংলগ্ন শালী নদীর উপর দিয়ে যে ব্রিজ গিয়েছে সেটির অবস্থা গত কয়েক বছর ধরেই বেহাল। বিকল্প উপায় না থাকায় সেই জরাজীর্ণ সেতুর উপর দিয়েই নিত্যদিন নদী পারাপার করতে বাধ্য হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অবস্থা যা তাতে যে কোনও মুহূর্তেই প্রাণহানি হতে পারে। কিন্তু, সেসবকে তোয়াক্কা না করেই সেতুর উপর দিয়ে দেদার আনাগোনা করছে বালি বোঝাই ট্রাক্টর। ফলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা আরও বেড়েছে।
বর্ষাকালে শালী নদীতে জল বাড়লে আরও বাড়ে আতঙ্ক। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাঁচ থেকে ছ’বছর ধরে এই সেতুটির অবস্থা খুবই খারাপ। প্রশাসন বিষয়টি জানলেও সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এদিকে বাগড়াডাঙা, শিমুল ডাং সহ নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার সাধারণ মানুষদের প্রতিনিয়ত পাত্রসায়ের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ব্লক অফিস সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে এই সেতুটিই ভরসা। প্রত্যহ আশপাশের একাধিক স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারাও এই সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বছর দুয়েক আগে এই শালী নদীতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তখনই সেতুর এক দিকের গার্ডওয়াল ভেঙ্গে পড়ে। সে সময় থেকেই ধীরে ধীরে সেতুর নিচের একটা অংশ থেকে মাটি সরে যেতে থাকে, ফলে দূর্বল হয়ে পড়ে সেতুর মূল কাঠামো। তার উপর সেতুর উপরে থাকা দু’দিকের রেলিংয়ের সিমেন্ট খসে রড বেরিয়ে পড়ে। বাম আমলে তৈরি হওয়া এই সেতু কবে সংস্কার হয় সেদিকেই আপাতত তাকিয়ে রয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ ।
সেতুর এই হাল নিয়ে রাজ্যের শাসকদল ও প্রশাসনকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন সোনামুখী বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি। তিনি বলেন, এই সরকারের এলাকার উন্নয়ন নিয়ে মাথাব্যথা নেই। অন্যদিকে তৃণমূল পরিচালিত হামিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আসগর আলী বলছেন, বিষয়টি বিডিও-র নজরে আছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।