
ইন্দপুর: তিন বছরে পরপর তিন জনের মৃত্যু। প্রত্যেকেই একই পরিবারের সদস্য। তাতেই ভূতের আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে গোটা গ্রামে। আতঙ্কে ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছেন অন্যত্র। আতঙ্কে কাঁটা প্রতিবেশীরাও। তবে মানুষকে বোঝাতে ইতিমধ্যেই আসরে নেমেছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন থেকে বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা। কিন্তু, তারপরেও পিছু ছাড়ছে না ভূতের ভয়।
বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের ভেদুয়াশোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁশকেটিয়া গ্রামের কৃষিজীবী এক পরিবারে পরপর তিন বছরে মৃত্যু হয় তিনজনের। প্রথমে মারা যান রমেশ বাউরি। গতবছর মৃত্যু হয় রমেশের দাদা সোমেশ বাউরির। সম্প্রতি মারা যান রমেশের ভাইপো বছর আঠারোর দেবব্রত বাউরি। দেবব্রতর মৃত্যুর পরই আতঙ্ক চেপে বসে এলাকায়। শুধু মৃতের পরিবারই নয় প্রতিবেশীদেরও ধারণা, কোনো অশরীরীর কূদৃষ্টিতেই এমন ঘটনা ঘটছে। মাঝেমধ্যে মৃতদের পরিবারে ভৌতিক কর্মকান্ডও ঘটতে থাকে বলে দাবি করতে থাকেন প্রতিবেশীদের একাংশ।
এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে ভয়ে ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয় মৃতদের পরিবারের বাকি সদস্যরা। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবেশীদের মধ্যেও। এলাকার বৃদ্ধা পদ্মা বাউরি বলছেন, “ওদের বাড়ির ৩ জন মারা যেতেই সবাই বলছে ভূত আছে। ওদের বাড়ির সবাই তো বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। আমরাও তো চলে যাব ভাবছি। এমন চলতে থাকলে কী করে থাকব! এখানে তো শুধু ছেলেরা পরপর মরে যাচ্ছে। কিন্তু মেয়েদের কিছু হচ্ছে না। কিছুই বুঝতে পারছি না। প্রায়শই বাড়ির সামনে নানারকম আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। ওরা মরার পর থেকেই এগুলো বেশি হচ্ছে।”
ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যায় স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকরা। গ্রামে গিয়ে গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে আতঙ্ক দূর করার চেষ্টা চালান বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীরাও। পরপর এই মৃত্যুর সঙ্গে কোনও ভৌতিক বা অশরীরীর সম্পর্ক নেই বরং অসুখের কারণেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে যুক্তি দিয়ে তা বোঝানোর চেষ্টা করে পুলিশ-বিজ্ঞান মঞ্চ। এমনকি গুজব ছড়ালে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপেরও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। বিজ্ঞান কর্মীদের আশা খুব দ্রুত আতঙ্ক কাটিয়ে ছন্দে ফিরবে বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের বাঁশকেটিয়া গ্রাম। এখন দেখার ভয় আদৌও কাটে কিনা।