
বড়জোড়া: এতদিন পঞ্চায়েতের নিজস্ব ভবন ছিল না। এবার সেই ভবনের জন্য অর্থ বরাদ্দ এবং তারপর টেন্ডার ডাকতেই আড়াআড়ি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল তৃণমূল। কোন গ্রামে পঞ্চায়েতের ভবন তৈরি হবে তা নিয়েই যত জটিলতা। প্রধানের পছন্দের জায়গা পছন্দ নয় অন্যান্য়দের। তা থেকেই তীব্র আকার ধারণ করেছে শাসকলদের গোষ্ঠীকোন্দল। অবস্থায় এমন জায়গায় গিয়েছে যে দলের পঞ্চায়েত প্রধানের ঠিক করা জায়গায় পঞ্চায়েত ভবন তৈরি হলে পদত্যাগ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলেরই অন্যান্য সদস্যরা। স্থানীয়রাও দ্বারস্থ হয়েছে স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের। ঘটনা বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের সাহারজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের।
বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের সাহারজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দফতর একসময় ছিল মুক্তাতোড় গ্রামে। আটের দশকে কোচকুন্ডায় উঠে আসে পঞ্চায়েত দফতর। কয়েকবছর যেতে না যেতেই সেই দফতর উঠে আসে শীতলা গ্রামের একটি ভাড়া বাড়িতে। গত প্রায় চার দশক ধরে সেখানেই ভাড়া বাড়িতে ওই দফতর চলছে। সম্প্রতি সাহারজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব ভবন তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়। সূত্রের খবর, শীতলা গ্রামে ওই পঞ্চায়েত ভবন তৈরির জন্য টেন্ডারও ডাকা হয়। আর তাতেই শুরু হয়েছে তৃণমূল পরিচালিত সাহারজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ১২ আসন বিশিষ্ঠ ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০ টি আসনই তৃণমূলের দখলে। তৃনমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তারাপদ ঘোষ শীতলা গ্রামেই নতুন পঞ্চায়েত ভবন তৈরির পক্ষে। অন্যদিকে পঞ্চায়েতের অন্য ৯ তৃনমূল সদস্য প্রকাশ্যেই প্রধানের বিরোধিতায় নেমেছেন। তাঁদের দাবি, পঞ্চায়েত প্রধান অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করে একতরফা ভাবে শীতলা গ্রামেই নতুন পঞ্চায়েত ভবন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন।
বিক্ষুব্ধ পঞ্চায়েত সদস্য অজয় পরামানিকদের দাবি সাহারজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মোটামুটি কেন্দ্রস্থলে রয়েছে সাহারজোড়া গ্রাম। তাছাড়া সাহারজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব ভবন তৈরির জন্য সাহারজোড়া গ্রামে জমিও কেনা রয়েছে। সাহারজোড়া গ্রামের ওই জমিতেই নতুন ভবন তৈরি হোক চান তৃনমূলের নির্বাচিত ৯ জন সদস্য। প্রধানের কথা মেনে শীতলা গ্রামে পঞ্চায়েত ভবন তৈরি করা হলে সেক্ষেত্রে পদত্যাগের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ওই ৯ পঞ্চায়েত সদস্য। স্থানীয় বড়জোড়া ব্লকের বিডিওর দ্বারস্থ হয়ে সাহারজোড়া গ্রামে নতুন পঞ্চায়েত ভবন নির্মাণের দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত জল কোনদিকে গড়ায়।