
বাঁকুড়া: বেশ কয়েকদিন ধরেই বিরাম নেই বৃষ্টির। তবে বাঁকুড়া জেলায় তেমন ক্ষতি হয়নি সবজি চাষের। উৎপাদনও মোটের উপর স্বাভাবিক থাকায় কৃষকরা আগেও যা দাম পাচ্ছিলেন এখনও তাই পাচ্ছেন। কিন্তু সেই সবজি যখন কিনতে আম-আদমি কিনতে যাচ্ছে তখনই পকেটে পড়ছে টান। গত এক সপ্তাহে বাঁকুড়ার প্রতিটি বাজারে সবজির দাম প্রকৃত অর্থেই দ্বিগুণ হয়েছে। আর এখানেই অভিযোগ উঠছে কালোবাজারির। অভিযোগ, কৃত্রিমভাবে মজুত করে রাখা হচ্ছে সবজি। তাতেই বাড়ছে দাম। কৃত্রিম অভাব তৈরী করে মজুতদারদের কালোবাজারির। এমতাবস্থায় টাস্ক ফোর্স কোথায় প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় মানুষ।
গত এক সপ্তাহে বাঁকুড়ার প্রতিটি বাজারেই সবজির দাম কার্যত দ্বিগুণ হয়েছে। যে ঝিঙে এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৩০ টাকা কিলো তাই এখন বেড়ে হয়েছে কিলো প্রতি ৭০ টাকা। শসা ৪০ টাকা প্রতি কিলো থেকে লাফ দিয়ে হয়েছে ৭০ টাকা প্রতি কিলো। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অন্যান্য সবজির দামও। লাউ ২০ থেকে বেড়ে ৩০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, করলা ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, পটল ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, মূলো ৪০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা প্রতি কিলো। আমদানি নির্ভর হওয়ায় দাম একই রয়েছে টমেটো, লঙ্কা, গাজরের।
খুচরো বিক্রেতাদের অনেকে যদিও বলছেন অত্যধিক বৃষ্টির কারণে সবজি চাষে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। তার জেরেই এমন দর বৃদ্ধি। কিন্তু উল্টো কথা শোনাচ্ছে জেলার উদ্যান পালন দফতর। দফতরের দাবি বর্ষার শুরুতে বাঁকুড়া জেলায় ভারী বৃষ্টি হলেও অধিকাংশ চাষের জমি থেকে জল এক-দু’দিনে নেমে যাওয়ায় তেমন ক্ষতি হয়নি। ক্ষতি সেভাবে না হওয়ার কথা বলছেন সবজf চাষিদের একাংশও। তাঁদের দাবি ক্ষতি যেমন হয়নি তেমনই সবজি বিক্রি করে তাঁরা বেশির লাভের মুখও দেখেননি। তাহলে সবজীর দামে এতটা বদল কেন?
সাধারণ মানুষ বলছেন আসলে ঝোপ বুঝে কোপ মারছেন আড়তদাররা। বৃষ্টির কারণ দেখিয়ে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করে মুনাফা তুলতে বাজারের সবজির ইচ্ছেমতো দর বৃদ্ধি করছে আড়তদাররা। সবজির বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলায় রয়েছে টাস্ক ফোর্স। জেলার বাজারগুলিতে তাঁদের নিয়মিত নজরদারি করার কথা। সবজি-সহ কৃষিজাত পণ্যগুলির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি হলে তা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করার দায়ও তাঁদের। কিন্তু, কোথায় টাস্ক ফোর্স? দেখা কেন যায় না? প্রশ্ন সাধারণের। যদিও টাস্ক ফোর্সের কর্তারা তা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করা হয়। তাঁরা বলছেন, বৃষ্টির জেরে ক্ষয়ক্ষতির জন্যই সবজির কিছুটা দর বৃদ্ধি হলেও দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণে আসবে।