
বর্ধমান: ‘ভলান্টিয়রি সার্ভিস’ নয়। পুরনো পদেই বহাল থাকতে চান কাজ হারানো শিক্ষক-অশিক্ষকরা। অন্তত তেমনটাই বলছেন বর্ধমানের চাকরিহারা এক শিক্ষক। সোমবার চাকরিহারাদের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছেন, চাকরিহারারা ‘ভলান্টিয়রি সার্ভিস’ দিতেই পারবেন। কিন্তু দেখা গেল পূর্ব বর্ধমানের গোপালবেড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি হারানো কর্মীরা কেউই ফিরে আসেননি। ফলত, কাজের ক্ষেত্রে খুবই সমস্যায় পড়েছে স্কুল।
জানা গিয়েছে, এই বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক এবং একজন গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি চলে গিয়েছে। আর তারপর থেকেই শুরু হয়েছে অচলাবস্থা। একদিকে নিয়মিত শ্রেণীর পাঠ পরিচালনার দায়িত্ব, অন্যদিকে গ্রুপ ডি-র কাজ—সব মিলিয়ে শিক্ষকদের উপর পড়ছে অতিরিক্ত চাপ। এর ফলে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং শিক্ষাদানের স্বাভাবিক ছন্দ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শিক্ষক না থাকায় ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। চাকরিহারা গ্রুপ ডি কর্মী রণজিৎ মণ্ডল জানান, “দীর্ঘ সাত বছর ধরে কাজ করছি। তারপর চাকরি হারানো আমাদের কাছে শুধুমাত্র আর্থিক নয়, মানসিক দিক থেকেও বিপর্যয়।” তিনি বলেন, “আমরা যোগ্য ছিলাম, কাজও করেছি নিষ্ঠার সঙ্গে। এখন হঠাৎ করে আমাদের বলছে ভলান্টিয়রি সার্ভিস দিতে। কেন দেব? আমরা আবার পরীক্ষা দিতে রাজি নই। শুধু চাই, পুরনো কাজটাই যেন ফিরে পাই।” তাঁর আরও প্রশ্ন, “একবার তো যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছি। নানা ধাপে ধাপে পার হয়ে কাজ করেছি। আর কতবার প্রমাণ দিতে হবে?”
প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার ভট্টাচার্য জানান, “পলিটিকাল সায়েন্স, সংস্কৃত আর এডুকেশন-উচ্চ মাধ্যমিকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের শিক্ষক নেই এই মুহূর্তে। এখনো কেউ ভলান্টিয়রি সার্ভিস দিতে এগিয়ে আসেননি। যতটা সম্ভব বর্তমান শিক্ষক আর পার্টিটাইম টিচারদের দিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে চেষ্টা করা হচ্ছে।” সহ শিক্ষক প্রশান্ত কুমার সাহা জানান, “একজন মাত্র গ্রুপ ডি ছিলেন। সেই রায়ের ফলে চাকরি গেছে। তার ফলে ঘণ্টা দেওয়া, জলের পাম্প চালানো শিক্ষকদেরই করতে হচ্ছে। বিদ্যালয় চালাতে সবরকম কাজ করতে হচ্ছে পড়ানোর ফাঁকে।”