প্রবীণের পাশে নবীন, নিজেদের জমানো টাকা দিয়ে বয়স্কদের খাবার,ওষুধ,জল সরবরাহে ব্যস্ত স্কুল পড়ুয়ারা
অন্য আরেক পড়ুয়া সুমন দে জানিয়েছে, এই কাজে কেবল তারা নয়, পাশে রয়েছেন স্কুল শিক্ষকদের একাংশ। তাঁরাও সাহায্য করছেন বিভিন্নভাবে। সবাই মিলেই কাজ করছে।
উত্তর ২৪ পরগনা: রাজ্যে বেলাগাম করোনা। রোজ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। আশঙ্কা ও অবসাদের ভয় ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে সাধারণের উপর। জটিল পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি আতান্তরে পড়েছেন প্রবীণরা (old)। তাঁদের অধিকাংশেরই সন্তান বাইরে কর্মরত। কেউ কেউ ত্যাগ করেছেন নিজের বৃদ্ধ মা-বাবাকে। কেউ করোনা (Corona) আক্রান্ত হলে সাহায্য তো দূর, সামান্য খাবার বা পানীয় জলটুকুও জুটছে না তাঁদের। বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের অসহায়তার কথা ভেবে তাঁদের পাশে দাঁড়াল বসিরহাট টাউন স্কুলের (Basirhat Higher Secondary Town School) পড়ুয়ারা।
বয়স কম। জোর নেই পকেটের। যেটুকু আছে তা পুরোটাই মনের। সেই মনের জোরেই পথে নেমেছে বসিরহাট টাউন হাই স্কুলের পড়ুয়ারা। নিজেদের আয় বলতে একটা বা দুটো টিউশনি। সেই জমানো টাকা দিয়ে কখনও বা ধার করে কখনও বা স্রেফ চাঁদা তুলে এলাকার বয়স্থদের জন্য খাবার, জল, ওষুধ কিনছে সুমন-আবিদারা। সেইসব জিনিস বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসছে বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের হাতে। পড়ুয়াদের এই কাজে উৎসাহ দিতে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন একাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। তাঁদের মতো করে যতটা পারছেন সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দিয়েছেন।
কোভিড (COVID19) অতিমারীতে নিজেদের সুরক্ষার কথাই যখন ভাবছেন সকলে, তখন নিজেদের ছোট কাঁধে গুরু দায়িত্ব তুলে নিল কেন এই পড়ুয়ারা? আবিদা সুলতানা নামের এক ছাত্রীর কথায়, ”ওঁদের বয়স হয়েছে। দেখার কেউ নেই। আমরা যতটা পারছি পৌঁছে সাহায্য় করার চেষ্টা করছি। এর বেশি কী করতে পারি!” অন্য আরেক পড়ুয়া সুমন দে জানিয়েছে, এই কাজে কেবল তারা নয়, পাশে রয়েছেন স্কুল শিক্ষকদের একাংশ। তাঁরাও সাহায্য করছেন বিভিন্নভাবে। সবাই মিলেই কাজ করছে। এলাকার প্রবীণদের দেখার কেউ নেই। সন্তানরাও থাকেন না। অবসাদের চোরা স্রোত জীবন জুড়ে। পুরোটা সম্ভব না হলেও যতটা সাহায্য় করা যায় তার চেষ্টাই করছে টাউন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা।
উল্লেখ্য, সরকারি বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে শেষ ২৪ ঘণ্টা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৮৪৬ জন। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ। সরকারি হিসেবে সংখ্য়াটা ১০,৭৩,৯৫৬ জন। পাশাপাশি পরিসংখ্যান বলছে রাজ্যে টানা ১১ দিন করোনায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। রাজ্যে গত একদিনে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে রাজ্যে করোনা সংক্রমিত হয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২,৯৯৩ জন।
আরও পড়ুন: শুনতে পাচ্ছি হিংসার সেকেন্ড ওয়েভ আসছে, বুকে গুলি খেয়েও ঘরছাড়াদের ফেরাব: রাজ্যপাল