শুনতে পাচ্ছি হিংসার সেকেন্ড ওয়েভ আসছে, বুকে গুলি খেয়েও ঘরছাড়াদের ফেরাব: রাজ্যপাল
"নিশীথ প্রামাণিক (Nisith Pramanik) এক জন সাংসদ হিসাবে আমার পাশে ছিলেন, বিজেপি নেতা হিসাবে নয়।" কোচবিহারে রাজ্যপালের পাশে বিজেপি সাংসদের উপস্থিতি নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তারই উত্তর এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে দিলেন জগদীপ ধনখড় (Governor Jagdeep Dhankhar)।
অসম: “নিশীথ প্রামাণিক (Nisith Pramanik) এক জন সাংসদ হিসাবে আমার পাশে ছিলেন, বিজেপি নেতা হিসাবে নয়।” কোচবিহারে রাজ্যপালের পাশে বিজেপি সাংসদের উপস্থিতি নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তারই উত্তর এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে দিলেন জগদীপ ধনখড় (Governor Jagdeep Dhankhar)। তাঁর বক্তব্য, নিশীথ প্রামাণিক এলাকার সাংসদ। গোটা পরিস্থিতি তাঁর নখদর্পণে থাকা প্রয়োজন। সাংসদ হিসাবেই এলাকা পরিদর্শন করেছেন নিশীথ।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার কোচবিহারের ভোট পরবর্তী হিংসা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেন রাজ্যপাল। মাথাভাঙা, দিনহাটা, শীতলকুচি যান তিনি। দিনহাটায় তাঁকে ঘিরে কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখান এক দল যুবক। তার বিরোধিতা করেন রাজ্যপাল। তবে বৃহস্পতিবার গোটা দিনই তাঁর পাশে দেখা গিয়েছিল নীশিথ প্রামাণিককে। তা নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্ক।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সেই প্রসঙ্গ তুলেই রাজ্যপাল যুক্তি দেন, একজন সাংসদ হিসাবে নিশীথ সেদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন। রাজ্যপাল বলেন, “রাজ্য জুড়ে হানাহানি চলছে। আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াব। আমার দায়িত্ব সংবিধানকে রক্ষা করা। আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াব।” কনভয় আটকানোর প্রসঙ্গে রাজ্যপাল বলেন, “আশা রাখছি কনভয় আটকানোর বিষয়ে তদন্ত হবে। কলকাতায় গিয়ে নির্দেশ জারি করব।মুখ্যসচিব, ডিজিদের বলেছি কারা এসব করল? ডিএম-এসপিরা কেউ যাননি অত্যাচারিতদের কাছে সদর্থক রোল প্লে করতে চাই।”
রাজ্যপাল স্পষ্ট করেন, “আমি রং বিচার করি না। বিজেপি, তৃণমূল বিভেদ করিনি। তৃণমূলেরও কেউ অত্যাচারিত হলে বলবেন, আমি যাব। রাজ্যপাল রবার স্ট্যাম্প, পোস্ট অফিস না। আমার দায়িত্ব সংবিধান বাঁচানো। ” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে রাজ্যপাল বলেন, “মমতা প্রথমে হুঁশিয়ারি দিলেন সেন্ট্রাল ফোর্স ক’দিন থাকবে। দেখে নেব। আমি এ ধরনের মন্তব্য আশা করি নি। কার্যকর্তাদের উসকালেন উনিই। শীতলকুচির ঘটনাকে পরিকল্পিত খুন বললেন, এসপিকে সাসপেন্ড করলেন, সিআইডি ডাকলেন! আমি স্তম্ভিত। ”
উল্লেখ্য, কোচবিহারের পর শুক্রবার অসম সফরে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ভোট পরবর্তী হিংসায় অসমে আশ্রয় নেওয়া ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। শ্রীরামপুর ও রানপাগলিতে দুটি শিবির পরিদর্শন করেন।
সকালেই তিনি কোচবিহার থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। হেলিকপ্টারেই তাঁর অসম যাওয়ার কথা ছিল। তবে আবহাওয়া খারাপের জন্য হেলিকপ্টার আসতে পারেনি। সড়কপথেই তিনি অসম যান। অসমের ধুবড়ি জেলার শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন তুফানগঞ্জের কয়েকটি পরিবার, যারা ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: অসমের শিবিরে আশ্রয়, ঘরছাড়াদের বাংলায় ফেরার আবেদন রাজ্যপালের
ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরার আবেদন জানিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। রাজ্য সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলেও তিনি তাঁদের আশ্বস্ত করেন। তবে এখনও পর্যন্ত ঘরছাড়ারা ঘরে ফেরার কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। তবে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যপাল বললেন, “শুনতে পাচ্ছি হিংসার সেকেন্ড ওয়েভ আসছে। আরও ভয়ানক সেই ওয়েভ। চোট নিয়ে এত প্রচার করলেন, তার জন্য স্যালুট। কিন্তু চোট সারার পর এত কিছু হল, কোথাও গেলেন না কেন?” রাজ্যপালের হুঙ্কার, “আমি বুকে গুলি খাব, তবুও ওঁদের ঘরে ফেরাব।”