বীরভূম: গরু পাচারের টাকা কী ভাবে হাতবদল, কীভাবেই বা কালো টাকা সাদা করা হয়েছে সেটা প্রমাণ করাই এখন সিবিআইয়ের কাছে মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ। গরু পাচারের তদন্তে আরও তথ্য প্রমাণ জোগাড় করতে বীরভূম চষে বেড়াচ্ছেন তদন্তকারীরা।
গরু পাচার কাণ্ডের তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই নিত্যনতুন তথ্য উঠে আসছে। আরও তথ্য প্রমাণ জোগাড় করতে মরিয়া সিবিআই। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পরে তাঁর ঘনিষ্ঠদের একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন কেষ্টকন্যা সুকন্যা, ঘনিষ্ঠ বিদ্যুত্বরণ গায়েন, মলয় পিট এমনকী কেষ্টর বাড়ির রাঁধুনি ও চালকল মালিক রাজীব ভট্টাচার্য।কখনও ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে, কখনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন, কখনও জমিজায়গা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বা যাঁদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে প্রত্যেকের কাছ থেকেই কোনও না কোনও নথি বা তথ্য প্রমাণ মিলেছে। সিবিআইয়ের দাবি, প্রত্যেকের সঙ্গেই অনুব্রতর যোগ রয়েছে। যেমন, কেষ্টর মেয়ে সুকন্যার সংস্থা এ এন এম অ্যাগ্রোকেমের ডিরেক্টর বিদ্যুত্বরণ গায়েন। বিদ্যুতের নামে একাধিক সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। বোলপুর পুরসভার গাড়ি চালক বিদ্যুত্ অত সম্পত্তির মালির কী ভাবে হলেন তা এখন সিবিআই স্ক্যানারে। আবার শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের কর্ণধার মলয় পিট কেষ্ট ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সিবিআইয়ের দাবি, মলয়ের কলেজে বিনিয়োগ করা হয়েছে সুকন্যার ভোলে ব্যোম রাইস মিলের টাকা। আবার চালকল মালিক রাজীব অনুব্রত স্ত্রীর চিকিত্সার জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করেছেন।
এখন সিবিআইয়ের কাছে যেটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তা হল, গরু পাচারের টাকা কীভাবে হাতবদল হয়েছে এবং কীভাবে কালো টাকা সাদা করা হয়েছে? সেই প্রশ্নের উত্তর পেতেই যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ে মরিয়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল এবং অনুব্রতের পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠদের ব্যাঙ্ক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য জানতে ইতিমধ্যেই কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের জিজ্ঞাসবাদ করেছে সিবিআই। এ ছাড়া এই সমস্ত অ্যাকাউন্টে কোথা থেকে টাকা এসেছে, সেই টাকা অন্য কোথাও বিনিয়োগ করা হয়েছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয় আধিকারিকদের কাছ থেকে। সম্পত্তির উত্স জানতে ইতিমধ্যেই কেষ্ট কন্যাকে নোটিসও পাঠিয়েছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। গরু-কয়লা থেকে বালি পাচার। তদন্ত যত এগোচ্ছে, উঠে আসছে পরের পর তথ্য। দুর্নীতির শিকড়ের খোঁজে কেষ্টভূমের মাটি কামড়ে পড়ে সিবিআই।