বীরভূম: বগটুই কাণ্ডে সিবিআই র্যাডারে আরও দুই। মূল অভিযুক্ত আনারুল শেখের দুই শাগরেদের খোঁজে সিবিআই। লালন ও জাহাঙ্গিরের খোঁজে রাজ্য জুড়ে তল্লাশি চলছে। আনারুলকে জেরা করে ওই দুই অভিযুক্তের নাম জানতে পেরেছেন সিবিআই তদন্তকারীরা। সিটের তদন্তেও উঠে আসে ওই দু’জনের নাম। সূত্রের খবর, আগুন লাগানোর সময়ে ঘটনাস্থলেই ছিল ওই দুজন। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, আনারুলের নির্দেশেই পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগানো ও বোমা ছুড়েছিল লালন ও জাহাঙ্গির। শুধু তাই নয়, দুষ্কৃতী দলকেও নেতৃত্ব দিচ্ছিল তারা। ঘটনার পর থেকেই পলাতক তারা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই গ্রেফতার করা হয় আনারুলকে। তারাপীঠ থেকে গ্রেফতার হয় মূল অভিযুক্ত। জেরার দ্বিতীয় দিনেই সিবিআই-কে তার আরও দুই শাগরেদের নাম জানিয়ে দেয় আনারুল।
আনারুল বগটুইয়ের ব্লক তৃণমূল সভাপতি। ঘটনার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন গ্রামবাসী ও স্বজনহারারা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সেই রাতে বগটুইয়ের উপ প্রধান ভাদু শেখের খুনের পর আনারুলের নির্দেশেই নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল আততায়ীরা। এমনকি পুলিশকেও ওই এলাকায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, দমকলের দেরিতে আসার নেপথ্যে নাকি ছিল তারই হাত। ঘটনার পর থেকে বাতাসপুরে আত্মগোপন করেছিলেন স্বজনহারাদের একাংশ। ঘটনার পরের দিন সকালে কেবল ভাদুর পরিবারের লোককে প্রকাশ্যে আসতে দেখা যায়। তার একদিন পর থেকে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেন মিহিলাল, শেখলাল। তাঁদের বাড়িতেই আগুন লাগানো হয়েছিল। পরিবারকে ফেলে তাঁরা পালিয়েছিলেন, তাই বেঁচেছেন।
TV9 বাংলার তরফে প্রথমে আনারুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর স্পষ্ট দাবি ছিল, তিনি সেসময় এলাকাতেই ছিলেন না। ভাদু শেখের খুনের পর তিনি হাসপাতালে ছিলেন। সিসিটিভি খুঁজলে মিলবে তার প্রমাণ। কথাগুলো বলার সময়ে এক ফোঁটাও বিচলিত হননি তিনি।
এরপর মুখ্যমন্ত্রী বগটুই গেলে, তাঁর সামনে ক্ষোভ উগরে দেন মিহিলাল, তাঁর পরিবারের সদস্যরা ও গ্রামবাসীরা। স্পষ্ট জানান আনারুলের অঙ্গুলিহেলনেই গোটা ঘটনা ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রী বগটুই দাঁড়িয়েই ডিজিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেখান থেকে হোক আনারুলকে গ্রেফতার করতে হবে।
আনারুলকে ফের ফোনে যোগাযোগ করে হলে, তিনি প্রতিক্রিয়া দিতে চায়নি। তখনও অবশ্য গ্রেফতার হয়নি তিনি। তার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে গ্রেফতার হয়। বুধবার ছিল সেই দিনটা। তারপরের দিন বৃহস্পতিবার সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার সময়ে বিস্ফোরক দাবি করে আনারুল। তার বক্তব্য, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। কিন্তু কে এর নেপথ্যে, তা বলেনি। তদন্তকারীরা সেই নামটাই জানতে তৎপর।