রামপুরহাট : ভয়ে ঘরে ফিরতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। পুলিশ আদৌ কোনও নিরাপত্তা দেবে কি না, সেই প্রশ্নও রয়েছে। যারা থেকে গিয়েছেন, তাঁরাও ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন। তবে তার মধ্যেও মুখ খুললেন প্রত্যক্ষদর্শী ফতেমা। যে সব বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ, তার কাছাকাছিই থাকেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, সোমবার রাতে আর্তনাদ কানে এসেছিল তাঁর। শিশু আর মহিলাদের চিৎকার শুনেছিলেন ফতেমা। কিন্তু ভয়েই বেরতে পারেননি ঘর থেকে। প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে শুনেছিলেন সেই বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার। তারপর সব থেমে যায়। রাতে আতঙ্কে উঁকি মেরে দেখার সাহসই পাননি তিনি। ঘরে তালা লাগিয়ে ভিতরে ঢুকে যান তিনি।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ঘুম ভাঙে ফতেমার। বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখেন তখনও আগুন জ্বলছে। কিন্তু মানুষের কোনও চিহ্ন নেই। সারারাত আগুন জ্বলল, অথচ এল না পুলিশ! এল না দমকল! কার্যত অবাক হয়েছিলেন তিনি। ফতেমা বলেন, ‘পুলিশ এলে হয়ত ওদের এ ভাবে মরে যেতে হত না।’ আর সোনা নামে ওই ব্যক্তির বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনা যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না তিনি। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘সোনা আর ভাদু শেখ একই দল করত। খুব ভাল বন্ধুও ছিল। তারপর কী হয়েছিল বলতে পারব না।’
প্রত্যক্ষদর্শী ওই মহিলা জানিয়েছেন, ওই সব বাড়ির খড়ের চালগুলো পুড়ে গিয়েছিল। তাঁর নিজের বাড়িতে থাকা গবাদিপশুগুলোও ছটপট করছিল। তবে আলো ছিল না বেশিক্ষণ। প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঘটনার রাতে কিছুক্ষণ পরই লোডশেডিং হয়ে যায়। ফলে অন্ধকার হয়ে যায় চারপাশ। কিছুই দেখা যায়নি তেমন। তবে কি কেউ খুন করল ওদের? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ ফতেমা।
উল্লেখ্য, আলাউদ্দিন শেখ নামে আর এক প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেছেন, পুলিশের সামনেই দরজা বাইরে থেকে ছিটকানি দেওয়া হয়েছিল। তালা মেরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি। আলাউদ্দিন বলেছেন, চারিদিকে বোমা পড়ছিল। ওই ভয়ে ওরা ঘরে ঢুকেছিল। এর মধ্যেই বাড়িতে বাইরে থেকে তালা মেরে দিয়ে, পেট্রোল ঢেলে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন : কয়েক ঘণ্টা আগেই বগটুই পৌঁছেছিল নবদম্পতি, চেনাই গেল না সাজিদ-মর্জিনার ‘লাশ’