বীরভূম: বাড়িতে জানিয়েছিলেন কাজে যাচ্ছেন বলে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও বাড়ি ফেরেননি তিনি। পরিবারের তরফে সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় খোঁজ শুরু করা হয়। কিন্তু তারপরও খোঁজ মেলেনি। সকালে বাড়ির সামনেই একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় ওই ব্যক্তির দেহ। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য বীরভূমের মল্লাপুরের বড় তুড়িগ্রামে। মৃত ব্যক্তির নাম পূর্ণ চন্দ্র লাহা। কিন্তু এই মৃত্যু ঘিরে রাজনৈতিক শোরগোলও তৈরি হয়েছে এলাকায়। কারণ ওই ব্যক্তি এলাকায় বিজেপি সমর্থক বলে পরিচিত। সেক্ষেত্রে এটি আদৌ আত্মহত্যা নাকি খুন? তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। খুন হলে তার পিছনে কি কোনও রাজনৈতিক কারণ রয়েছে? প্রশ্ন উঠছে সেটা নিয়েও। আপাতত এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ণ চন্দ্র লাহা দিনমজুরি, ছোটোখাটো কাজ করে সংসার চালাতেন। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকে তিনি বিজেপি দলকে সমর্থন করা শুরু করেন। তবে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করেননি কখনই। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি থেকে বার হন। আর ফেরেননি। অনেক খুঁজেও না পাওয়ায়, পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার সকালে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে যাচ্ছিলেন। সেসময় প্রতিবেশীদের সূত্রেই তাঁরা খোঁজ পান, বাড়ির অদূরেই একটি গাছে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে ওই ব্যক্তির দেহ।
মল্লারপুর থানার পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে। মৃতদেহ উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। রহস্যমৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছে মল্লারপুর থানার পুলিশ। রহস্যময় কারণ, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কারোর নামে নির্দিষ্ট করে অভিযোগ দায়ের হয়নি। পরিবারের তরফে মেলেনি কোনও ‘ক্লু’। বাড়িতেও সেরকম কোনও ঝামেলা, দেনাপাওনা ছিল না বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
তবে এই মৃত্যু নিয়ে রাজনৈতিক শোরগোল পড়েছে। বিজেপির বক্তব্য, কোনও রাজনৈতিক কারণেই খুন হয়ে থাকতে পারেন ওই ব্যক্তি। আসলে এখানে শাসকদল বিরোধীদের কন্ঠরোধ করছে। অন্যদিকে, তৃণমূলের বক্তব্য, বিরোধীরা পায়ের তলার মাটি হারাচ্ছে। গ্রাম্য বিবাদের ঘটনা থাকতে পারে, কিংবা আত্মঘাতীও হতে পারেন ওই ব্যক্তি। সব ঘটনাতেই রাজনীতির রং লাগানো হচ্ছে। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা আপাতত কিছুই বুঝতে পারছেন না কেন এমনটা ঘটল। কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই পরিবারের সদস্যরা।