
বোলপুর: এমন মন্তব্য তাঁর মুখে প্রথম নয়। তিনি বোলপুরের ‘বেতাজ বাদশা’। ফলত, তাঁর সামনে পরে পর্যুদস্ত হতে হয়েছে কত পুলিশকে। কিন্তু কেউ কখনওই অনাস্থা জারির ‘সাহস’ পায়নি। স্বভাববলেই হয়তো সেই ‘হেনস্থার’ স্বভাব খানিক রয়ে গিয়েছিল তাঁর মধ্যে। অবশেষে যার মাশুল গুনতে হচ্ছে কেষ্ট মণ্ডলকে।
শুক্রবার, বীরভূম কোর কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে পুলিশ অফিসারকে হেনস্থা করা ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ তোলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। একটি অডিয়ো ক্লিপ পোস্ট করে তিনি বলেন, ‘বীরভূমের ছাল ছাড়ানো বাঘের মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। তিনি একজন পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে ঠিক কি ভাষায় কথা বলছেন!’
কী ছিল সেই অডিয়ো ক্লিপে?
সেই অডিয়ো ক্লিপে শোনা যায়, বোলপুর থানার আইসি-কে কাজলের লোক বলে কদর্য ভাষা গালিগালাজ করছেন কেষ্ট মণ্ডল। অবশ্য, প্রথম দিকে সেই গলা আদৌ অনুুব্রতর কিনা তা নিয়ে মুখ খোলেনি কেউ। সুকান্তর পোস্টের ঘণ্টাখানেক পর বড় পদক্ষেপ তৃণমূলের। কেষ্টকে সময় বেঁধে দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেয় দল। পাশাপাশি, সে যদি ক্ষমা না চায়, তার জন্যও তাঁকে শোকজ করা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় দল তরফে।
সূত্রের খবর, দলীয় ভাবেই শুধু ব্যবস্থা নয়। অনুব্রতকে শোধরাতে নবান্ন থেকেও গিয়েছে নির্দেশ। আর তারপরেই বড় পদক্ষেপ নিয়েছে বোলপুর থানা। এদিন বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, অফিসারকে কদর্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগে অনুব্রতর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা, সরকারি কর্মীকে হুমকির মামলা রুজু করা হয়েছে। কেষ্ট বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলির বেশির জামিন-অযোগ্য। পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, যতটা কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায়। তা নেওয়া হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনুব্রতর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া প্রতিটি মামলা জামিন-অযোগ্য। এছাড়াও যে টুকু সাক্ষ্য-প্রমাণ রয়েছে, তার ভিত্তিতে তাঁকে পুনরায় গ্রেফতার করার মতো তথ্য পুুলিশের হাতে রয়েছে।
ইতিমধ্য়েই বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ে গিয়ে তলব নোটিস ধরিয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, কোর কমিটি সদস্যকে আগামিকাল থানায় এসে হাজিরা দেওয়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের বেঁধে দেওয়া সময়ের আগেই ক্ষমা চেয়েছেন কেষ্ট। আর সেই লিখিত চিঠি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার ক্ষণিক পরেই তাঁর কাছে এল পুলিশের তলব নোটিস।