বগটুই: বগটুই গ্রামে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার প্রায় আড়াই দিন পর ‘অভিশপ্ত’ বগটুইতে গেলেন মমতা। আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে দেখে কেঁদে ফেললেন স্বজনহারাদের পরিবার। মমতার সামনেই হাউহাউ করে কাঁদলেন তাঁরা। কান্নায় ভেঙে পড়েন মিহিলাল। তাঁর কাতর আর্তি পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে তাঁদের বাড়ি। স্বজনহারা হয়েছেন তাঁরা।
মমতা কী ঘোষণা করলেন?
এদিন মমতা ঘোষণা করেন, “এলাকায় সবসময় পুলিশ-পিকেটিং থাকবে। যাঁদের বাড়ি-ঘর পুড়ে গিয়েছে তাঁরা প্রত্যেকে ১ লক্ষ টাকা করে পাবেন। দরকার পড়লে আরও ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে তাঁদের। সঙ্গে আরও ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ হিসেবে। যাঁদের ৬০ শতাংশ বাড়ি পুড়ে গিয়েছে তাঁরা ১ লক্ষ টাকা করে পাবেন। তিনজন শিশুকে দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা।”
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী স্বজনহারা দশটি পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।প্রথম এক বছর নিয়ম অনুযায়ী গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগ করা হবে। সেই সময় তাঁরা মাসে দশ হাজার টাকা বেতন পাবেন। এর পরের বছর তাঁদের পাকাপাকি ভাবে নিয়োগ করা হবে।
এদিন, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পূর্বেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ” জীবনের বিকল্প চাকরি হয় না। নিজের কোটা থেকে আমি ১০ জনকে চাকরি দেব। শুধু এখানকার লোক ঘটনায় জড়িত, না বাইরের লোক এসেছে, তা দেখতে হবে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
বস্তুত, সোমবার রাতে রামপুরহাটে খুন হন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ। আর সেই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্য়েই এলাকার একাধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত আট জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ফরেনসিক টিমের প্রাথমিক অনুমান, প্রথমে কুপিয়ে খুন করে পরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের তরফে ইতিমধ্যেই সিট গঠন করা হয়েছে তদন্তের জন্য।
ওই ঘটনার পর আজ এলাকায় পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুর একটা নাগাদ সেখানে পৌঁছান তিনি। এরপর মাইক হাতে নিয়ে বলতে শুরু করেন। শুরুতেই নির্দেশ দেন, দ্রুত বগটুইয়ের তৃণমূল ব্লক সভাপতি আনারুল শেখকে গ্রেফতার করতে হবে। TV9 বাংলা প্রথম থেকেই বলে আসছিল এই ‘হত্যালীলা’র নাটের গুরু আনারুল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাতেই সিলমোহর দিলেন। তবে এই ঘটনার কেস ডায়েরি এমনভাবে সাজানোর নির্দেশ দিলেন, যাতে কোনও ফাঁকফোকড় না থাকে।