Bagtui Massacre: ‘আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই গ্রামে এসেছিল আনারুল’, বগটুইকাণ্ডে বিস্ফোরক দাবি মিহিলালের
CBI Probe in Bagtui Massacre: মঙ্গলবার দুপুরে মিহিলাল শেখ সংবাদমাধ্যমকে নিজের বাড়িতে ডেকে দাবি করেছেন বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই আনারুল গ্রামে এসেছিল এবং তারপর এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
রামপুরহাট : বগটুইয়ের হত্যাকাণ্ডে (Bagtui Massacre) এবার নাম জড়াল রামপুরহাটের বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের (TMC MLA Ashish Banerjee)। তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন মিহিলাল শেখ। তাঁর অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, বগটুই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী মিহিলাল শেখ। মিহিলাল শেখের বক্তব্য, “আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এখন আনারুলকে গাইড করছেন। আনারুলকে ব্লক সভাপতি উনিই রেখে দিয়েছিলেন। এর আগেও আমাদের উপর ঝামেলা ঝঞ্ঝাট নিয়ে আমরা আনারুলের কাছে গিয়েছিলাম, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলাম। আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ই আনারুলকে বলে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। কাউকে যেন না ছাড়া হয়।”
মিহিলাল আরও বলেন, “এতদিন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য মুখ খুলিনি। আজ মুখ খুলতে বাধ্য হলাম। যারা আমাদের দশ জনকে পুড়িয়ে মারল, তারা জেলের মধ্যে বিয়ার খাচ্ছে। জেলের মধ্যে বাইরে থেকে খাবার যাচ্ছে। এগুলো আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় করছে। তিনি আমাদের উপর প্রচণ্ড অত্যাচার করেছেন।”
এর আগে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানিয়েছিলেন, রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে তিনি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছিলেন আনারুলকে দায়িত্ব থেকে সরানোর কথা। তখন থেকেই একটি তত্ত্ব উঠে আসছিল, বগটুইকাণ্ডে ধৃত আনারুল শেখ এলাকার বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। কিন্তু বগটুই গ্রামে কার নির্দেশে এই হামলা চলেছিল, তা নিয়ে এখনও যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছেও এখনও স্পষ্ট নয়। এরই মধ্যে ঘটনার অন্যতম সাক্ষী তথা মৃতদের মধ্যে একজনের আত্মীয় মিহিলাল শেখ বিধায়কের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন। মিহিলালের এই মন্তব্যের পর বীরভূমের রাজনীতিতে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা বগটুইয়ের তদন্তে নামার পর মিহিলাল শেখকে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকদফা ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প অফিসে। সেদিন রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, তা মিহিলালের থেকে জানার চেষ্টা করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে বিধায়কের বিরুদ্ধে যে বিস্ফোরক অভিযোগ মিহিলাল তুললেন, তা তিনি কীভাবে জানলেন, সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জেলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, শুরু থেকেই বিষয়টি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোর্টে ঠেলে দেওয়ার একটি চেষ্টা দেখা গিয়েছে।
এই বিষয়ে রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “এটা তার কল্পনাপ্রসূত কথা এবং সর্বৈব মিথ্যা কথা। এই ঘটনার বিষয়ে তো আমি জানতামই না। এক মাস পর যখন তিনি এই কথাগুলি বলছেন, তখন এগুলি কারও শেখানো বুলি বলে আমার মনে হচ্ছে। যে ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবেই আমার কোনও যোগ নেই, সেই ঘটনাকে তুলে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে, আমার মনে হয়, এটাকে সুপরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে। যাঁরা এই কথাগুলি বলছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও তদন্ত হোক। কোনও দুর্নীতির সঙ্গে আমি জড়িত নই। এক কাপ চা কারও কাছে খাইনি। এতটুকু প্রমাণ থাকলে আমি নির্বাসন নিয়ে নেব।”