বগটুই : বগটুই হত্যাকাণ্ডে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে আগেই। ঘটনার দিন রাতে কেন পুলিশ সময়ে পৌঁছল না ঘটনাস্থলে, পরিস্থিতি বুঝে কেনই বা আগাম নিরাপত্তা দেওয়া হল না, সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে। আর এবার তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ উঠল সেই রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধেই। সামনেই ছিল প্রমাণ। অথচ ঘটনার পর তদন্ত শুরু করলেও সেই প্রমাণ দেখেনি পুলিশ। ঘটনার ১২ দিন পর সেই প্রমাণ জোগাড় করা কঠিন হয়েছে উঠেছে সিবিআই আধিকারিকদের পক্ষে। এসডিপিও-র বাংলোর উল্টোদিকেই রয়েছে একটি হার্ডওয়ারের দোকান, যেখানে লাগানো রয়েছে ১০ টি সিসিটিভি। কেন ওই সিসিটিভির ফুটেজ পরীক্ষা করল না পুলিশ? প্রশ্ন উঠেছে সেখানেই। আর এত দিন পর সেই প্রমাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। কারণ ওই সব ক্যামেরার ফুটেজ মুছে গিয়েছে।
বগটুই গ্রামে যাওয়ার পথে এসডিপিও-র বাংলোর ঠিক বিপরীতে একটি হার্ডওয়ারের দোকানে রয়েছে ১০ টি সিসিটিভি। সিবিআই গোয়েন্দারা শনিবার সেখানেই যান। দোকানে গিয়ে জানতে পারেন সেই ক্যামেরায় তিন দিনের বেশি রেকর্ডিং সংরক্ষণ থাকে না। মেমরি কম হওয়ায় অটো ডিলিট হয়ে যায়, অর্থাৎ আপনা আপনি মুছে যায় ফুটেজ। ঘটনার পর তিন দিন পর্যন্ত তদন্তভার ছিল রাজ্য পুলিশের হাতেই। হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য সিট গঠন করেছিল রাজ্য। সেই সিট-এর আধিকারিকরাই তদন্ত করছিলেন।
পুলিশ ওই তিনদিনে কোনও ফুটেজ সংগ্রহ করেনি। সংগ্রহ করলে সেই রাতে দুষ্কৃতীদের গতিবিধি গোয়েন্দাদের হাতে আসত বলে মনে করছে সিবিআই। শনিবার তাই ওই দোকানে গিয়েও খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে সিবিআইকে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এখন চেষ্টা করছে, ওই হার্ডওয়ারের দোকানের হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করে ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানোর। সেখান থেকে যদি কোনও ভাবে পুরনো ফুটেজ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। কিন্তু তদন্তভার নেওয়ার পরেও কেন রাজ্য পুলিশ এই সব গুরুত্বপূর্ণ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করলো না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
ক্যামেরাগুলো যে ভাবে লাগানো আছে, তাতে একদিকে বগটুই মোড় আর অন্যদিকে বগটুই যাওয়ার রাস্তা দুটোই দেখা যায়। তাই অভিশপ্ত সেই রাতে দুষ্কৃতীরা কোথা থেকে এল, কোন দিকে পালাল, সবটাই ধরা পড়ার কথা। তাই ওই ফুটেজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। দোকানের মালিক জানিয়েছেন, দোকানের নিরাপত্তার জন্য ওই সব ক্যামেরা লাগিয়েছেন তিনি। আর সেই ক্যামেরায় রাস্তাও দেখা যায়। কিন্তু পুলিশ তাঁর কাছে কোনও ফুটেজ চায়নি। তিনি নিজেও ওই সময় ফুটেজ দেখেননি বলে জানিয়েছেন।