বোলপুর: বাড়ি থেকে আড়াই মিনিটের দূরত্ব। কিন্তু ক্লাস নিতে সেখানেও যাননি কোনওদিন। অর্থাৎ চাকরিতে যোগ দিয়েছেন বটে, তবে স্কুলে তাঁকে কোনওদিনই দেখা যায়নি। প্রত্যেক মাসে বেতন পেয়েছেন নিয়ম করে। হাজিরা খাতা রোজই পৌঁছে যেত বাড়িতে। সেখানেই নিয়ম করে সই করেছেন অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডল। অভিযোগ তেমনটাই। আজ, বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে সুকন্যা মণ্ডলের। আর এদিকে, সেই কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকালেই পৌঁছে গিয়েছিলেন TV9 বাংলার প্রতিনিধি। গিয়ে কী দেখা গেল সেখানকার চিত্র? বিতর্কের মুখে কিছুই বলতে চাইলেন না টিচার ইন চার্জ। মুখ কুলুপ আঁটলেন তিনি। এমনকি মুখে কুলুপ খুদে পড়ুয়াদেরও।
টিচার ইন চার্জ তনুশ্রী ঘোষ মণ্ডলকে সোজাসাপটা একটা প্রশ্ন। আপনাদের স্কুলে মোট কত জন শিক্ষক। তিনি বলেন, “মোট পাঁচ জন। সুকন্যা মণ্ডলকে নিয়েই। আমি কিছুই বলতে বাধ্য নই। হাইকোর্টে কেসটা চলছে। আপনারা পরে জানতে পারবেন। আমি এখন কিছু বলতে পারব না।”
‘উত্তর দিতে চাইছি না…’ আমতা আমতা গলায় বললেন টিচার ইন চার্জ। দৃশ্যত তাঁকে অপ্রস্তুতের মধ্যে পড়তে হল। দৃশ্যত তাঁর চোখেমুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। আর এক খুদে পড়ুয়ার নিষ্পাপ উত্তর, ‘সুকন্যা মণ্ডলকে চিনি না…’
শুধু সুকন্যা নয়, অনুব্রত মণ্ডলের পিএ অর্ক দত্তও এই স্কুলের শিক্ষক। কিন্তু খাতায় কলমে। অর্থাৎ তিনিও কোনদিন স্কুলে আসেননি। অথচ বেতন পেয়েছেন প্রতি মাসে। অর্থাৎ তিন জন শিক্ষককে দিয়েই ক্লাস চলত কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক থেকে পড়ুয়ারা কেউই এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। হাইকোর্টে আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের করা মামলার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সুকন্যা মণ্ডলকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট এর প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করে, সেটাই দেখার।