পশ্চিম বর্ধমান: বোমা বাঁধতে গিয়ে এক তৃণমূল (TMC) কর্মীর মৃত্যু নিয়ে সরব হলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিদায়ী বিধায়ক তথা বিজেপি প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tiwari)। এই ঘটনা কেন্দ্র করে নির্বাচনের আগে ফের একবার সামনে এল বিজেপি (BJP) বনাম তৃণমূল প্রার্থীর তরজা। জিতেন্দ্রের অভিযোগ, তাঁকে হত্যা করার জন্যই বোমা বাঁধা হচ্ছিল। এই ষড়যন্ত্রের ‘মাস্টারমাইন্ড’ তৃণমূল প্রার্থী নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলে তাঁর অভিযোগ।
বিদায়ী বিধায়ক জিতেন্দ্রর অভিযোগ, নরেন্দ্রনাথের নির্দেশেই স্থানীয় তৃণমূল (TMC) প্রধানদের সঙ্গে পরিকল্পনা করেই এই বোমা বাঁধার কাজ চলছিল। এমনকী, নির্বাচন কমিশনের কাছে এই মর্মে অভিযোগ জানাবেন বলেও জানান বিজেপি নেতা।
বুধবার, পাণ্ডবেশ্বরের জামবাদে বোমা বাঁধতে গিয়ে মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী সবর্ণ চৌধুরীর। জামবাদে, কালীমন্দিরের পেছনে মাজি পাড়ার কাছে মমতা কোড়া নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার বাড়িতে বোমা তৈরি চলছিল বলে খবর। পুলিশ সূত্রে খবর, সবর্ণ ছাড়া আরও তিনজন এই বোমা তৈরির কাজে নিযুক্ত ছিল। যদিও তাঁদের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাড়ির মালিক মমতা দেবীর দাবি, বোমা তৈরির ব্যাপারে কিছুই জানতেন না তিনি। বুধবার রাতে বিস্ফোরণের আওয়াজ পেয়ে এসে ওই তৃণমূল কর্মীর ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ আবিষ্কার করেন।
বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, পুলিশ যদি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে তবে জামবাদ, অণ্ডাল-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর বোমা পাওয়া যাবে।
যদিও, এই ঘটনায়, তৃণমূল (TMC) প্রার্থী নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান বীরবাহাদুর সিং-এর পাল্টা দাবি, আদি ও নব্য বিজেপির কোন্দলের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল থামাতে পারছেন না জিতেন্দ্র। তৃণমূলকে বদনাম করতেই বিজেপি নেতা এই মন্তব্য করছেন। জিতেন্দ্রের অবশ্য দাবি, বীরভূম থেকে দুষ্কৃতীদের এনে সন্ত্রাস ছড়ানো হচ্ছে। তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন পাণ্ডবেশ্বরে বোমা-গুলি বন্ধ ছিল। নির্বাচনের আগে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে নরেন্দ্রনাথ এই কাজ করছেন।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলে থাকতেই জিতেন্দ্রর সঙ্গে নরেন্দ্রনাথের ‘আদায় কাঁচকলা’য় সম্পর্ক ছিল সুবিদিত। একাধিকবার নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে জিতেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র। এমনকী, পাণ্ডবেশ্বরের দলীয় সভার কাজেও দলের তরফ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি জিতেন্দ্রকে। ফলে অনেকদিন ধরেই দলে থেকে ‘বেসুরো’ বাজছিলেন জিতেন্দ্র। একবার দল ছেড়ে দিয়ে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তৃণমূল ফিরেছিলেন তিনি। কিন্তু তারপর তৃণমূলের তরফ থেকে সমস্ত দলীয় পদ থেকে একরকম ব্রাত্য করেই রাখা হয় তাঁকে। অবশেষে গত ২ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেন জিতেন্দ্র।
আরও পড়ুন: ভিডিয়ো: বদলের বার্তা নিয়ে অশোকের জন্য অক্ষয়ের গানের প্যারোডি বামেদের