নয়া রণকৌশলের প্রস্তুতি পদ্ম শিবিরের, নদিয়ায় সাংগঠনিক বৈঠকে দিলীপ

সদ্যই দল ছেড়েছেন মুকুল রায়। কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। উপনির্বাচনে কাকে প্রার্থী করা হবে তা নিয়ে যদিও এদিন মুখ খোলেননি বিজেপি নেতা, তবে দলের অন্দরের গুঞ্জন ওই কেন্দ্রে জয়প্রকাশ মজুমদার প্রার্থী হতে পারেন।

নয়া রণকৌশলের প্রস্তুতি পদ্ম শিবিরের, নদিয়ায় সাংগঠনিক বৈঠকে দিলীপ
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Updated on: Jun 18, 2021 | 6:58 PM

নদিয়া: বিধানসভা নির্বাচনে লক্ষ্যপূরণ না হওয়ার পর থেকেই একে একে বেসুর বাজতে শুরু করেছেন বিজেপির (BJP) একাধিক কর্মী সমর্থকেরা। বুথস্তর থেকে শুরু করে উচ্চ নেতৃত্ব, ক্রমশই পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলের দিকে ভারী হচ্ছে পাল্লা। এই পরিস্থিতিতে, সংগঠনে জোর দিচ্ছে পদ্ম শিবির। জেলায় পরিস্থিতি খুঁটিয়ে দেখতে বৈঠক করছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে অন্য়ান্য শীর্ষ নেতৃত্ব। শুক্রবার, নদিয়ায় সাংগঠনিক বৈঠক সেরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের ‘স্ট্র্য়াটেজি’ নিয়ে কথা বললেন দিলীপ ঘোষ। তোপ দাগলেন রাজ্য সরকারকেও।

এদিন, বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি বলেন, “আমাদের অনেক কর্মী আজ ঘরছাড়া। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের জেরে তাঁদের অনেকে রাজনৈতিক হিংসার শিকার। প্রথমেই তাঁদেরর সুরক্ষা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করছি। পাশাপাশি, তাঁদের বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা চলছে। দ্বিতীয়ত,দলের কর্মীদের সঙ্গে বুথ স্তরে বৈঠক পর্যালোচনা চলছে। নতুন করে দলকে আন্দোলনে নিয়ে আসার জন্য কিছু কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। যোগদিবস, বৃক্ষরোপণ, শ্যামাপ্রসাদের প্রয়াণদিবস সংক্রান্ত নানা কর্মসূচি চলছে। সেসব চলবে। আরও কিছু কর্মসূচির কথা চিন্তা করা হয়েছে। পাশাপাশি করোনা মোকাবিলা ও ইয়াস বিপর্যয়ে সাধারণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বেশ কিছু জনপ্রকল্পের সূচনা করা হবে। আমরা পঁচিশ থেকে ছাব্বিশ গুণ শক্তি বাড়িয়েছি।  বাংলার ৩৮ শতাংশ মানুষ আমাদের নির্বাচন করেছে। ভবিষ্য়তে এই শতকরা আরও বাড়বে।”

সদ্যই দল ছেড়েছেন মুকুল রায়। কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। উপনির্বাচনে কাকে প্রার্থী করা হবে তা নিয়ে যদিও এদিন মুখ খোলেননি বিজেপি নেতা, তবে দলের অন্দরের গুঞ্জন ওই কেন্দ্রে জয়প্রকাশ মজুমদার প্রার্থী হতে পারেন। তবে, এ বিষয়ে স্পষ্ট করেননি বিজেপি সভাপতি। অন্যদিকে, মুকুলের দলত্যাগ প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, “যার ইচ্ছে সে দল ছেড়ে গিয়েছে, তাতে আমাদের কোনও ক্ষতি হয়নি।”

বিধানসভা নির্বাচনের এপিসেন্টার নন্দীগ্রামে মমতা-শুভেন্দুর দ্বৈরথে জয়ী হন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামে ভোট গণনায় কারচুপি হয়েছে এমন অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। সেই ভোট গণনা নিয়েই মামলা হাইকোর্টে ওঠে। কিন্তু, শুক্রবার, আদালতে উপস্থিত ছিলেন না শুভেন্দু অধিকারী। সেই প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, “মমতা দিদি ভোটের সময় বলে বেরিয়েছেন ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’, কিন্তু, মেদিনীপুর নিজের মেয়েকে চায়নি। সেইজন্যই হেরে গিয়েছেন। হেরে গিয়ে কী করবেন, বুঝতে পারছেন না, আক্রোশ থেকে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। আদালতেই এর বিচার হবে।” নন্দীগ্রাম মামলায় বিচারপতি কৌশিক চন্দের সঙ্গে দিলীপের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে আঙুল তুলেছে শাসক শিবির।

তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ টুইট করে বলেছেন, “বিচারপতি কৌশিক চন্দ বিজেপি দরদী। নন্দীগ্রাম মামলা কি তাঁর হাতে নিরপেক্ষ থাকবে? অনুরোধ বিচারপতি চন্দ মামলাটি ছেড়ে দিন।”

এই প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, “আমার কারোর সঙ্গে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা থাকতেই পারে। তার মানে কি তিনি তাঁর কাজে ও পদের প্রতি অন্যায় করবেন?ন্যায়সঙ্গতভাবেই এই মামলার বিচার হবে।” যদিও, বিজেপির রাজ্য় সভাপতির মন্তব্যের প্রত্য়ুত্তরে প্রতিক্রিয়াহীন থেকেছে শাসক শিবির।

আরও পড়ুন: সপাটে চড় অভিষেককে! মৃত চণ্ডীপুর-কাণ্ডের সেই অভিযুক্ত যুবক, ‘পরিকল্পিত খুন’, দাবি বিজেপির