ঘাসফুলে প্রত্যাগামী ‘চাণক্য’, দল ছাড়লেন ‘মুকুল ঘনিষ্ঠ’ বিজেপি নেতা

শুক্রবার, বনগাঁতে দলের সাংগঠনিক বৈঠক সারেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন বনগাঁ লোকসভার বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর-সহ তিন বিজেপি বিধায়ক। অনুপস্থিত ছিলেন জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি তপনবাবুও।

ঘাসফুলে প্রত্যাগামী 'চাণক্য', দল ছাড়লেন 'মুকুল ঘনিষ্ঠ' বিজেপি নেতা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 11, 2021 | 9:50 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: প্রাক্তন বিজেপি (BJP) নেতা মুকুল রায় তৃণমূলে যোগদান করার পরেই বনগাঁর জেলা বিজেপি সহ-সভাপতি, ‘মুকুল ঘনিষ্ঠ’ তপন সিনহা দলত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। দলত্যাগের কারণ হিসেবে নিজের শারীরিক অসুস্থতাকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তপনবাবু। পরে তৃণমূলে যোগ দেবেন কি না সে বিষয়ে স্পষ্টত কিছু না জানিয়ে ‘ভবিষ্য়তে দেখা যাবে’ বলে কার্যত জল্পনা উসকে দেন বিজেপি নেতা।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ তৃণমূল ভবনে মুকুল রায়ের তৃণমূলে (TMC) পুনরায় যোগদানের পরেই শোরগোল পড়ে যায় বিজেপির অন্দরে। একের পর এক প্রতিক্রিয়াশীল বাক্যবাণে পদ্ম নেতারা বিদ্ধ করেন তাঁদের একদা ‘চাণক্য’-কে। মুকুল তৃণমূলে ফিরতেই দলত্যাগের ঘোষণা করলেন বনগাঁর বিজেপি সহ-সভাপতি তপন সিনহা। ঘরে বসেই একটি ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। আমার বয়স বাড়ছে। আমি দলের কাজ করতে পারছি না। কিছুক্ষেত্রে দলের অনুশাসন ও নির্দেশ মতোই কাজ করা সম্ভবপর হচ্ছিল না। আবার অনেক ক্ষেত্রেই বার্ধক্য়জনিত কারণে সামাল দিতে পারছিলাম না। আজ জানলাম মুকুল দা তৃণমূলে গিয়েছেন। মুকুল দা আমরা ফ্রেন্ড ফিলোজ়ফার গাইড। ‘৯৮ সাল থেকে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। এর আগে আমি তৃণমূলে (TMC) ছিলাম। ২০১৭তে আমি আর মুকুলদা একসঙ্গে বিজেপিতে আসি। তারপর থেকে বিজেপিতেই আছি। আমরা কেউ আরএসএস করে আসিনি। তবে চেষ্টা করেছি কীভাবে ভাল কাজ করা যায়। কাজ করেছি। তবে, সময়ে সময়ে দেখেছি, নির্বাচনেও লক্ষ্য করেছি, একাধিক কর্মসূচি হয়েছে কিন্তু সব কিছুর খবর সর্বদা পাইনি। আজ শারীরিক অসুস্থতার কারণেই দলত্যাগ করছি। পরে কোনও সিদ্ধান্ত নিলে তা নিশ্চই জানাবো।” এই মর্মে, বনগাঁর বিজেপি জেলা সভাপতি মনস্পতি দেবকেও একটি লিখিত চিঠি দিয়েছেন তপনবাবু।

বিধানসভা নির্বাচনে বনগাঁতে ভাল ফল করেছে বিজেপি (BJP)। লোকসভার ৭টি আসনের মধ্যে ৬টিতেই জয়লাভ করেছে পদ্ম শিবির। তারপরেও দলে কেন এমন ভাঙন ধরেছে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও প্রশ্ন উঠছে। শুধুমাত্র তৃণমূলের রেকর্ড জয়কেই এর কারণ হিসেবে মানতে নারাজ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের একাংশের দাবি, মতুয়াদের সিএএ এনআরসি ইস্যু নিয়ে কেন্দ্রের বিভ্রান্তি সৃষ্টি, নির্দিষ্ট কোনও প্রতিশ্রুতি না দেওয়া অনেকটাই বিজেপির প্রতি আস্থা কমিয়েছে। শুক্রবার, বনগাঁতে দলের সাংগঠনিক বৈঠক সারেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন বনগাঁ লোকসভার বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর-সহ তিন বিজেপি বিধায়ক। অনুপস্থিত ছিলেন জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি তপনবাবুও। এরপরেই দলত্যাগের চিঠি দেন তপনবাবু। এ বিষয়ে বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, ” নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করবার জন্য এই দলে এসেছিলেন। দল ক্ষমতায় আসেনি তাই স্বার্থসিদ্ধি হবে না ভেবে তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। এতে বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না।”

আরও পড়ুন: ‘মুকুলিত’ ঘাসফুল, ‘ওঁ তুখোড় নেতা’, মন্তব্য রাজু বিস্তার, ‘বেদনাক্রান্ত’ অগ্নিমিত্রা