মেখলিগঞ্জ: তখন ক্লাস টেনে পড়ত মেয়েটা। মেখলিগঞ্জের এক কোচিং সেন্টারে পড়তে গিয়ে বিজয় নামে এক যুবকের সঙ্গে হয় বন্ধুত্ব। তবে বয়সে সে মেয়েটির থেকে বেশ খানিকটা বড়। ধীরে ধীরে তৈরি হয় ঘনিষ্ঠতা। এরইমধ্যে একদিন মেয়েটির বাড়িতে কেউ না থাকায় সটান তার বাড়ি গিয়ে হাজির হয় বিজয়। তখনই পানীয়ের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে খাওয়ানো হয় ওই নাবালিকাকে। নিজের মোবাইলে বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি তুলে রাখে। সেই ছবি দেখিয়েই পরবর্তীতে লাগাতার ধর্ষণ করা হয় নাবালিকাকে। চলতে থাকে ব্ল্যাকমেল। চাওয়া হয় টাকা। চাপের মুখে পড়ে নিজের কন্যাশ্রীর (Kanyashree) টাকা তুলে বিজয়কে দিয়েওছিল ওই নাবালিকা।
যদিও তাতেও কমেনি বিজয়ের (২২) লোভ-লালসা। এরইমধ্যে ১৮ বছর বয়স হলে মেয়েটির বিয়ে ঠিক করে তাঁর পরিবার। তবে সেখানেও বাধ সাধে বিজয়। মেয়েটির আপত্তিজনক ছবি পাঠিয়ে ভেঙে দেয় বিয়ে। তখনই আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই নির্যাতিতা। প্রাণে বাঁচলেও এবার পাল্টা রুখে দাঁড়ান মেয়েটির মা। মেয়ের মুখে সবটা শোনার পর থানার দ্বারস্থ হয় তাঁর পরিবার। ২০২১ সালের ১৩ নভেম্বর কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ থানায় দায়ের হয় অভিযোগ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৬৭বি ধারা (শিশু পর্নগ্রাফি আইন) এবং ৬ নম্বর পকসো ধারা-সহ বেশ কয়েকটি ধারায় দায়ের হয় মামলা।
যদিও তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় ২ বছরের কাছাকাছি সময়। অবশেষে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল মেখলিগঞ্জ আদালত। ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে বিজয়ের। শুক্রবার সাজা ঘোষণা করেছেন বিচারক হিরন্ময় সান্যাল। সরকার পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আপত্তিকর যে সমস্ত ছবি অভিযুক্তের মোবাইল থেকে যে অন্যদের মোবাইলে পাঠানো হয়েছিল তা প্রমাণ করা গিয়েছে। কাজে এসেছে প্রযুক্তি। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে শেষ পর্যন্ত সাজা ঘোষণা করেছে আদালত।