
কোচবিহার: বাংলায় ভোটের আগে দিল্লিতে পাক খাচ্ছে বন্দেমাতরম বিতর্ক। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘বঙ্কিমদা’ বলে লোকসভায় সম্বোধন করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তা নিয়েই যত বিতর্ক। তৃণমূলের দাবি, আসলেই অপমান করা হচ্ছে বাংলার মনীষীদের। মোদীর বক্তব্য়ের মাঝেই সুর চড়াতে দেখা গিয়েছিল শতাব্দী রায়, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষদস্তিদারের মতো তৃণমূল সাংসদদের। এবার কোচবিহারের জনসভা থেকে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার অবদানের কথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, “বিজেপির উদ্দেশ্যে বলেন, দেশ যখন স্বাধীন হয়েছিল তোমরা জন্মাওনি তখন। আমরাও জন্মাইনি। কিন্তু, আমাদের বাবা-দাদুরা জন্মেছে। তাঁরা জানতেন স্বাধীনতা আন্দোলন। তাঁরা আমাদের শিখিয়েছেন।” এরপরই বঙ্কিম-বিতর্কে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষবাণ শানান। বলেন, “বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে বললেন বঙ্কিমদা। যেন মনে হচ্ছে হরিদা আর শ্যামদা। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় যিনি জাতীয় গান লিখেছিলেন তাঁকে এইটুকু সম্মান দিলেন না। আপনাদের তো মাথা নিচু করে নাকখত দেওয়া উচিত জনগণের কাছে। তাতেও ক্ষমা হবে না। আপনারা দেশের ইতিহাসকে, সংস্কৃতিকে, আন্দোলনকে সম্মান করেছিল। বাংলা আন্দোলন করেছিল। ৯০ শতাংশ লোক বাংলা থেকে শহিদ হয়েছিল, জেলে ছিল, বন্দি ছিল, ফাঁসির কাঠে ছিল। আর ছিল পঞ্জাব। কোথায় ছিলেন আপনারা? রাজা রামমোহন রায়কে বলে দিলেন তিনি নাকি দেশপ্রেমিক নন, ক্ষুদিরামকে বলে দিলেন সন্ত্রাসবাদী, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙলেন।”
কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে শকুনি মামার সরকার, দুর্যোধনের সরকার বলেও এদিন তোপ দাগতে দেখা যায় মমতাকে। বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার একটা স্বৈরাচারী সরকার, বিজেপি সরকার ভ্রষ্টাচারী সরকার, শকুনি মামার সরকার, দুর্যোধনের সরকার, দুঃশাসনের সরকার। এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। বাংলা আগে বেরোলে তবেই দেশ রক্ষা হবে। তা নাহলে সংবিধান, গণতন্ত্র, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনকে শেষ করে দিয়ে এরা গায়ের জোরে যা ইচ্ছা তাই করে যাবে।”