
কোচবিহার: বাংলাতেই জন্ম, বাংলাতেই বাস! দীর্ঘ ১৫ বছর থেকে অসমে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন! তাঁর কাছেই নাকি এসেছে NRC-র নোটিস। কোচবিহার জেলার রামপুর ২ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা দীপঙ্কর সরকার। এই বছর এই দু’বার তাঁর কাছে এসেছে NRC নোটিস। প্রথমে সেভাবে গুরুত্ব না দিলেও থানার তরফে বারংবার যোগাযোগ করা হচ্ছে তাঁর সঙ্গে। তিনি বিভিন্ন দরকারি প্রমাণপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে দেখাও করেন। গত কয়েকদিনের NRC নোটিস আতঙ্কে তার পরিবার-সহ গোটা এলাকা ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।
একজন প্রতিবেশীর কথায়, “দীপঙ্করের পূর্বপুরুষরা হয়তো ওপার বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন, কিন্তু দীপঙ্করের বাবা জন্ম রামপুরেই।” তবে কেন এই নোটিস,তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে পড়শিরাও। শুক্রবার দীপঙ্কর সরকারের সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূল জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, যে কোনও সমস্যার তৃণমূল তাঁদের পাশে রয়েছেন।
দীপঙ্কর বলেন, “প্রথমে যখন নোটিস আসে, তখন ওতো বুঝতে পারিনি। পরে আবাস নোটিস আসে। আমাদের কাছে নির্দিষ্ট দিতে কাগজপত্র জমা করতে বলে। আমার কাছে একটা দেখতে চায়, সেটা ছিল না, বাকি কাগজ দেখা। আমি ১৫ বছর ধরে অসমেই কাজ করছি। জুলাই মাসের ১০ তারিখ বাড়ি আসি।”
তৃণমূল নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “এরা তো পুরোপুরি শরণার্থী পরিবারের ছেলে। আসলে মোদী সরকার তো পদবী রিফিউজি ও অনুপ্রবেশকারী ভাগ করে নিচ্ছে। এরা পুরোপুরি রিফিউজি পরিবারের ছেলে। ১৯৬০ সালে ভোটার তালিকায় বাবার নাম।”
উল্লেখ্য, এর আগে কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা উত্তমকুমার ব্রজবাসীর কাছে এভাবে নোটিস আসে। এই ইস্যুতে সুর চড়ান খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সামাজিক মাধ্যমেও লেখেন, ” দিনহাটার বাসিন্দা উত্তমকুমার ব্রজবাসীর কাছে বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনাল তাঁকে বিদেশি বা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে হেনস্থা করছে।” অসমের বিজেপি সরকার এ রাজ্যে এনআরসি চাপানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।