কোচবিহার: ৫১২ বছর অতিক্রান্ত বড়দেবীর পূজায় আজকেও লাগে নর রক্ত । অষ্টমীর নিশিতে গুপ্তি পূজায় এক পরিবারের লোকেরা নিজেদের আঙ্গুল চিরে রক্ত দেন ।
চিরাচরিত রাজ ঐতিহ্য মেরে কোচবিহারের দেবী বাড়িতে পূজিত হচ্ছেন বড় দেবী। প্রায় ৫১২ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে কোচ রাজবংশের বড়দেবীর পূজা ।
এই পুজোর ইতিহাস কোচবিহার ও তার আশপাশের এলাকাগুলিতে বেশ প্রচলিত। আনুমানিক ১৫১০ সালে তৎকালীন কোচবিহারের রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা মহারাজা বিশ্বসংহের সুযোগ্য পুত্র মহারাজা নরনারায়ণ এই পুজোর প্রচলন করেন। কোচবিহারের মহারাজা নরনারায়ণ স্বপ্নে দেবীকে দেখেছিলেন। সেই স্বপ্নে পাওয়া দেবী বড়দেবী হিসেবে কোচবিহারে পূজিত হয় ।
অষ্টমীর নিশিথে গুপ্তি পূজা হয় । একেবারে শুরুর দিকে বড়দেবীর পূজায় একবারই নরবলি হয়েছিল। পরবর্তী তে তৎকালীন মহারাজা এই নরবলি প্রথা বাতিল করেন। পরিবর্তে নর রক্তে দেবীর পূজা হয়।
আজ অষ্টমীর গভীর রাতে কোচবিহারের কালজানির এক পরিবার বংশপরম্পরায় গুপ্তি পূজায় অংশগ্রহণ করে। আঙ্গুল চিরে রক্ত দেন ওই পরিবারের লোকেরা । সেই রক্তেই পূজিত হয় বড়দেবী।
এই দেবীর বৈশিষ্ট্য হল ‘কোচ’ জাতির মানুষের চেহারার বেশ কিছু মিল লক্ষ্য করা যায়। এই দেবীর শরীরের রং লাল, মুখের গঠন খানিকটা চ্যাপ্টা। ১১ ফুট লম্বা হয় দেবী প্রতিমা। দেবীর বাহন সিংহ, বাঘ। ষষ্ঠী থেকে রীতি মেনেই পুজো হয়। তবে দেবীর ভোগ কেবল পায়েস। দেবী প্রতিমা বিসর্জন হয় রাজপরিবারের নিজস্ব ঘাট বাঁধানো যমুনী নদীতে।