কোচবিহার: বৃষ্টির দেখা নেই কোচবিহারে। প্রবল গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত জেলাবাসীর। এবার বৃষ্টি চেয়ে ব্যাঙের বিয়ে (Frog Wedding) দিলেন গ্রামের লোকেরা। শুধু বিয়েই নয়, রীতিমতো পাত পেড়ে খাওয়ানো হল ‘ভোজ’। মেনু ছিল খিচুড়ি, তরকারি। ব্যাঙের বিয়ে গ্রাম বাংলায় কোনও নতুন ঘটনা নয়। এর আগেও একাধিক গ্রামে এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। সম্পূর্ণ মনের বিশ্বাস থেকে এই ব্যাঙের বিয়ে দেওয়ার রীতি গ্রামেগঞ্জে। সোমবার তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের অন্দরানফুলবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গাবাড়ি এলাকায় গ্রামবাসীরা এই বিয়ের আয়োজন করেন। ঠিক যেভাবে বাড়ির কোনও সদস্যর ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া হয়, ব্যাঙের বিয়েতেও বসেছিল তেমনই মহাআসর।
সন্ধ্যা থেকেই বাজতে থাকে সানাই। সঙ্গে ছিল ঢোল, আরও বেশ কয়েকটি বাদ্যযন্ত্র। ফুল, বেলুন, কলাগাছ গিয়ে সাজানো হয়েছিল বিয়ের মণ্ডপ। তাতে রঙিন আলপনা। পাড়ার মেয়ে-বউদের হাতে ছিল বরণডালা। বাজনার তালে তালে কোমর দুলিয়ে চলে বরণপর্ব। এরপর বিয়ে, সিঁদুরদান, বাদ যায়নি কিছুই।
ওদিকে তখন আবার অতিথিদের খাওয়াদাওয়ার আয়োজন চলছে। নানা তরকারি কেটে চলেছেন গ্রামের লোকেরা। একদল আবার খিচুড়ি রান্নায় ব্যস্ত। নুন ঠিক হলো কি না, হলুদ, ডাল মাপ মতো পড়েছে কি না সেসব নিয়ে ব্যস্ত। ঠিক যেন বাড়ির বিয়ে। পাড়ার লোকেরা সকলেই বিয়ের মণ্ডপের সামনে হাজির।
গ্রামেরই ২০-২৫ জন মহিলা এই বিয়ের আয়োজন করেন। বাজেট ছিল ১৫ হাজার টাকা। সাধারণ একটি বিয়ের মতোই সমস্ত রকমের আয়োজন ছিল। উদ্যোক্তা কাঞ্চন দাস, মুক্তি বর্মন জানান, “আমাদের ভারতবর্ষ কৃষি প্রধান দেশ। বেশ কিছু দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় জমির মাটি ফেটে চৌচির। কৃষকেরা ক্ষতির সম্মুখীন। লৌকিক প্রথা মেনেই তাই ব্যাঙের বিয়ে দিলাম।”
গ্রামের লোকেরা জানান, এর আগেও দু’বার ব্যাঙের বিয়ে হয় গ্রামে। তার পরই বৃষ্টি এসেছিল। এবারও তেমনটা হবে বলেই বিশ্বাস গ্রামের লোকজনের। ভালভাবে বিয়ে মেটার পর লাইন করে সব মাটিতে বসে চলে ভোজ-পর্ব। পাতে পড়তে থাকে গরম গরম খিচুড়ি আর পাঁচমিশালি তরকারি।