কোচবিহার: নিয়োগ কেলেঙ্কারি থেকে গরু, কয়লা পাচার, লাগাতার দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ শাসকদল। গারদের পিছনে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো তাবড় তাবড় নেতারা। ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারই এখন বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের কাছে। পঞ্চায়েতে ভোটে দুর্নীতিমুক্ত প্রার্থী বাছতে রাজ্যজুড়ে নবজোয়ার কর্মসূচি করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। প্রার্থী বাছাইয়ে চলেছে গোপন ব্যালটে ভোট। যদিও তারপরেও মনোনয়ন পর্ব শুরু হতেই গোঁজ কাটায় বিদ্ধ হয়েছে শাসকদল। ভোটের টিকিট না পেয়ে দিকে দিকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে গিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, সর্বত্রই একই ছবি। এবার তাঁদের উদ্দেশেই কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
“কিছু কিছু জায়গায় কেউ কেউ চুরিও করবে আবার প্রার্থীও হতে চেয়েছে। এটা আমরা হতে দিচ্ছি না।” কোচবিহারের সভা থেকে এদিন এ বার্তাই দিলেন মমতা। প্রসঙ্গত, কোচবিহারের চান্দামারি থেকেই এবারের পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার শুরু করেছেন তিনি। রবিবার বিকালেই হেলিকপ্টারে কোচবিহার পৌঁছে গিয়েছেন মমতা। সোমবার সকালেই যোগ দেন জনসভা। সেখানে দলের দামাল ছেলেদের শায়েস্তা করতে একগুচ্ছ দাওয়াইও দিয়েছেন। একইসঙ্গে দুর্নীতি রুখতেও যে দল কঠোর পদক্ষেপ করতে চলেছে তাও জানান। স্পষ্ট জানিয়ে দেন এবার থেকে তাঁরাই নিয়ন্ত্রণ করবেন পঞ্চায়েত। কেউ যাতে চুরি করতে না পারে সে কারণেই এই পদক্ষেপ।
আবাস যোজনা থেকে পঞ্চায়েতের নানা কাজ, প্রায়শই কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান, উপপ্রধানদের বিরুদ্ধে। অভিষেকের নির্দেশে পদ খুয়িয়েছেন অনেকে। যদিও তারপর তাঁরা ফের পেয়ে গিয়েছেন পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট তবে অস্বস্তির চোরা স্রোত রয়েই গিয়েছে শাসক শিবিরের অন্দরে। উপর মহল থেকে কড়া বার্তা দিয়েও রোখা যায়নি কাটমানির স্রোত। এই প্রেক্ষাপটে মমতার কড়া বার্তা পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিনের সভা থেকে মমতাকে সাফ বলতে শোনা যায়, “মনে রাখবেন কাউকে এক পয়সাও দেবেন না। জনগণের যত স্কিম আছে এর জন্য সরকার এক পয়সাও আপনার থেকে নেয় না। এটা সরকারের টাকা। যদি কেউ টাকা চায় তাহলে তাঁর ছবি তুলে আমার কাছে পাঠিয়ে দেবেন। তারপর আমি দেখব কার কত বড় ক্ষমতা।” এখন দেখার দিনের শেষে মমতার দাওয়াইয়ে কাজ কতটা হয়।