কোচবিহার: টিন দিয়ে ঘেরা দেওয়াল। ঘরের এক কোনে ছোট্ট একটা টিভি। ১৭ দিন ধরে সেই টিভি-র পর্দা থেকে চোখ সরাতে পারেননি কেউ। যদি একটা ভাল খবর আসে! মঙ্গলবার সকাল থেকে যখন সুখবরের ইঙ্গিত আসতে শুরু করেছে, তখনও একটানা চলছে টিভি। অবশেষে সেই পর্দায় ভেসে উঠল ‘ব্রেকিং নিউজ’। টানেল থেকে বেরিয়ে আসছেন শ্রমিকেরা। তবু আপনজনের সঙ্গে কথা না বলা পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারছিলেন না মানিক তালুকদারের স্ত্রী। শেষ পর্যন্ত কথা হল। ভিডিয়ো কলেও দেখাও গেল মানিকবাবুকে।
গত ১২ নভেম্বর থেকে টানেলের অন্ধকারে আটকে ছিলেন ৪১ জন শ্রমিক। গত কয়েকদিনে চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন স্ত্রী। আপাতত সুস্থ হলেও ঘুম আসেনি ১৬ টা রাত। সন্তানদের নিয়ে কোনও ক্রমে দিন কাটিয়েছেন তিনি। ভাল খবরের অপেক্ষা আর খারাপ খবরের আশঙ্কায় রাত ঘুম-খাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল গোটা পরিবারের।
মাস ছয়েক আগে সুড়ঙ্গে ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিলেন কোচবিহারের মানিক তালুকদার। কিন্তু সেই অভিশপ্ত রবিবার আটকে পড়ার খবর আসে। তাঁর স্ত্রী বলেন, “খুব কষ্টে কেটেছে। সে কথা বলার মতো নয়। এখন কথা হল। ভাল আছে। সুস্থ আছে। চাই, তাড়াতাড়ি ফিরে আসুক।” ভিডিয়ো কলেও কথা হয় মানিকবাবুর সঙ্গে। হাসিমুখে ওপার থেকে মানিক তালুকদার বলেন, ‘সবাইকে বলে দিও আমি ভাল আছি।’ আপাতত ঘরে ফেরার অপেক্ষা তুফানগঞ্জে।