
দিনহাটা: সব লড়াই কি ভেস্তে দেবে SIR? সাবেক ছিটমহলগুলিতে এই নিয়ে বেড়েছে উদ্বেগ। রাজ্য়ে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন প্রক্রিয়া ঘোষণা হতেই ঘুম উড়েছে এলাকাবাসীদের। প্রতি মুহুর্ত কাটছে চিন্তা মাথায় নিয়ে। ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই। মধ্যরাতে প্রত্যাহার হল ছিটমহল। যার জেরে বাংলাদেশের অধীনে থাকা ১১১টি ভারতীয় ছিটমহল চলে ভারতের অধীনে। আর ভারতের অধীনে থাকা ৫১টি বাংলাদেশী ছিটমহল চলে যায় সেদেশে। স্বস্তি পান প্রায় সাত দশক ধরে নাগরিকত্বহীনতায় ভোগা ছিটমহলবাসীরা।
কিন্তু নাগরিকত্বের ভয় ফিরে এল ১০ বছরের মাথায়। মধ্যরাতের যে চুক্তি দূর করেছিল সব চিন্তা। SIR প্রক্রিয়া ঘোষণা হতেই উদ্বেগ বেড়েছে সাবেক ছিটমহলবাসীদের মনে। কী হবে তাঁদের? আবার কাটা যাবে নাম? এই সব প্রশ্নই উড়ে বেড়াচ্ছে ওই প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে। এঁদের অনেকেরই আবার নাম নেই ২০০২ সালের তালিকায়। কেউ কেউ ২০১৫ সালের আগে অবৈধ ভাবে ভোটার কার্ড করেছিলেন। তাঁদের অনেকেই পড়ে গিয়েছেন আতান্তরে।
এদিন কোচবিহারের দিনহাটা লাগোয়া এক সাবেক ছিটমহলবাসী বলেন, ‘২০১৫ সালে যেদিন ছিটমহল বিনিময় কার্যকর হল, সেদিনের ছাড়া আমার কাছে তার আগের কোনও কাগজ নেই। এমনকি, ২০১৪ সালেরও কোনও কাগজ আমি দেখাতে পারব না।’ এদিন মৈনউদ্দিন নামে আরও সাবেক ছিটমহলবাসী বলেন, ‘আমাদের নেতা-নেত্রীরা আশ্বাস দিয়েছেন। ছিটমহল নিয়ে কী হবে জানি না। এখানে তো আমাদের কাছে ভোটার-আধার-রেশন ছাড়া কিছুই নেই। ২০১৫ সালে একটা সার্ভে লিস্ট দিয়েছিল সেটা রয়েছে।’
যাদের কাছে কাগজ রয়েছে, তাঁরা যেমন চিন্তিত, তেমন ভাবেই চিন্তিত কাগজ না থাকারাও। ছিটমহল বিনিময়ের আগে অনেকেই অবৈধ ভাবে ছিটমহল ছেড়ে বাংলার অন্য কোনও সীমান্তবর্তী জায়গায় জমি-জায়গা কিনে নিশ্চিন্তে থাকতে শুরু করেন। যে কারণে পরবর্তীতে ছিটমহল বিনিময়ের সময় সার্ভে তালিকায় নাম ওঠে না তাঁদের। ফলত, এসআইআর নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে তাঁদের মনেও। বর্তমানে ওই সাবেক ছিটমহলবাসী এক বাসিন্দা বলেন, ‘২০১১ সালে জনগণনায় আমাদের নাম ওঠেনি। ওই সময় আমরা বাইরে ছিলাম। আমার শ্বশুরের নাম উঠেছে, দেওরের নাম উঠেছে। কিন্তু আমার ও আমার ছেলেমেয়ের নাম ওঠেনি। তাই অনেকটাই চিন্তায় রয়েছি।’