‘মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে পুলিশ,’ থানার সামনে গায়ে আগুন লাগাল স্কুল পড়ুয়া!

অগ্নিদগ্ধ মদন রজককে বলতে শোনা যায়, "আমি একজন স্কুল পড়ুয়া। পুলিশ আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। আমাকে রোজ থানায় হাজিরা দেবার নামে ৪ ঘণ্টা ধরে বসিয়ে রাখে।''

'মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে পুলিশ,' থানার সামনে গায়ে আগুন লাগাল স্কুল পড়ুয়া!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 12, 2021 | 10:08 PM

কোচবিহার: থানা চত্বরে ঢুকে গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করল এক স্কুল পড়ুয়া! ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল হলদিবাড়িতে।

স্কুল পড়ুয়ার পরিবারের অভিযোগ, একটি মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে মদন রজক ও তার আত্মীয় আকাশ সফিকে গত কয়েকদিন ধরে থানায় হাজিরা দিতে হচ্ছিল। প্রতিদিন তাদের সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত থানায় বসে থাকবার পর তাদের হাজিরা নেওয়া হত। সঙ্গে প্রতিদিন জুটত পুলিশের গালমন্দ। এদিন দুপুরে তারা যখন মোটর বাইকে চেপে হলদিবাড়ি শহরের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল, সেই সময় পুলিশ তাদের বাইক আটকে মারধর করে এবং মোটর বাইক ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। এরপর বাড়ি ফিরে সব ঘটনার কথা খুলে বলে ওই পড়ুয়া। কান্নায় ভেঙে পড়ে সে।

এরপর পরিবারের সদস্যরা মিলে থানায় উপস্থিত হয়। পড়ুয়াকে মারধরের কারণ জানতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে প্রথমে বচসা শুরু হয়। এরপর পুলিশ তাদের ওপর বেধড়ক লাঠি চার্জ করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে মদন রজক নামে বছর আঠোরোর ওই যুবক থানায় গিয়ে গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।

হলদিবাড়ি থানার পুলিশই ওই যুবককে উদ্ধার করে প্রথমে হলদিবাড়ি হাসপাতাল এবং পরে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে ছেলেটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ স্থানান্তরিত করার কথা বলা হয়েছে বলে পরিবার সূত্রে খবর।

ঘটনায় ওই যুবকের মা আশা রজক জানান, “ওই সময় থানার ভেতর পুলিশ আচমকাই আমাদের উপর চড়াও হয়। আমাদের লাঠিপেটা করতে থাকে। আমরা বাঁচবার জন্য যে যার মতো পালাতে থাকি। এরপর আমার ছেলে অগ্নিদগ্ধ হয়। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি এর সুবিচার চাই।”

আকাশ সফি বলে, “আমাদের প্রতিদিন থানায় হাজিরা দিতে হচ্ছিল। আতঙ্কিত ছিলাম আমরা। তার উপর আজ গন্ডগোল হওয়ার পর সন্ধাবেলায় থানায় হাজিরা দিতে গেলে কপালে নির্ঘাত পুলিশের মার জুটবে। এই ভেবেই আমার ভাই গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে।”

হাসপাতালের বেডে শুয়ে অগ্নিদগ্ধ মদন রজককে বলতে শোনা যায়, “আমি একজন স্কুল পড়ুয়া। পুলিশ আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। আমাকে রোজ থানায় হাজিরা দেবার নামে ৪ ঘণ্টা ধরে বসিয়ে রাখে।”

আরও পড়ুন: ‘সাম্প্রদায়িক’ বিজেপি! কাস্তে-পদ্মের কৃষক নেতা ও ৩০০ কর্মীর যোগদান ঘাসফুলে 

এদিকে এ নিয়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার কে কান্নানের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, হলদিবাড়ি থানায় এমন একটি ঘটনার কথা তাঁর কানে গিয়েছে। তবে কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। এই ঘটনার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।