মাথাভাঙা: বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রী একই বিদ্যালয়ে চাকরি করেন দীর্ঘ দিন ধরে। সেই বিদ্যালয়ের অপর শিক্ষিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে প্রধান শিক্ষকের। অভিযোগ এমনই। আর এই নিয়ে বিদ্যালয়ের মধ্যেই সুর চড়িয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী এবং অপর শিক্ষিকা। তুলকালাম কাণ্ড বেধে যায় স্কুল চত্বরে। স্কুল ভর্তি ছাত্র-ছাত্রীদের সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। আর ঘটনায় ক্ষিপ্ত অভিভাবক সহ এলাকাবাসী চড়াও হয়ে সেই শিক্ষক এবং শিক্ষিকাকে আটক করে রাখে। বিদ্যালয় পরিদর্শকের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত শান্ত হয় পরিস্থিতি।
এদিকে গন্ডগোলের জেরে শিকেয় উঠেছে স্কুলের পঠনপাঠন। বিদ্যালয়ে গিয়ে কি শিখছে পড়ুয়ারা? শিক্ষক শিক্ষিকারা যদি পড়ুয়াদের সামনে এমন আচরণ করেন তাহলে কোন ভরসায় বাড়ির ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাব? এ প্রশ্নই এখন এলাকার বাসিন্দাদের মুখে মুখে।
এদিন চাঞ্চল্য এই ঘটনা ঘটেছে কোচবিহারের মাথাভাঙা ২ ব্লকের বড় শৌলমারী গ্রাম পঞ্চায়েতের বড় শৌলমারী দেবশিং পাড়া পঞ্চম পরিকল্পনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। জানা গিয়েছে, দেবশিং পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে ১০ বছর আগে এই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে তাঁরা বিয়ে করেন। বর্তমানে তাঁদের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।
বেশ কিছুদিন আগে এই বিদ্যালয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন অপর এক শিক্ষিকা। তিনি অবিবাহিত। ওই শিক্ষকের স্ত্রীর সন্দেহ, নবনিযুক্ত শিক্ষিকার সঙ্গে নতুন করে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন তাঁর স্বামী। এ নিয়ে প্রায় এক বছর আগে থেকে শুরু হয়েছে ঝামেলা। এমনকী ওই শিক্ষিকা এখন তাঁর স্বামীর সঙ্গে একসঙ্গে থাকেন না বলেও জানা যাচ্ছে।
বেশ কিছুদিন আগেও এই নিয়ে স্কুলে ঝামেলা হয়। অভিভাবকরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেন। ঠিক হয় পারিবারিক ঝামেলার আঁচ যাতে বিদ্যালয়ে না পড়ে সেটা দেখা হবে। তবে ফের শুক্রবার এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে হাতাহাতি দেখে হতবাক পড়ুয়ারা। খবর চাউর হতেই স্থানীয় বাসিন্দা এবং অভিভাবকরা চড়াও হয় বিদ্যালয়ে। ওই শিক্ষক ও শিক্ষিকাকে আটক করে রাখেন। খবর পেয়ে মাথাভাঙা চার নম্বর সার্কেলের বিদ্যালয় পরিদর্শক ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এলাকাবাসীর দাবি, এই শিক্ষকদের অন্য জায়গায় বদলি করা হোক। এ বিষয় নিয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শক বলেন, সব শুনলাম। অভিভাবকরা আগে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করুক। তারপর বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যদিও যে শিক্ষিকার সঙ্গে ওই শিক্ষকের বিবাহবর্হিভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বলে দাবি তিনি বলছেন, আমি কোনও অন্যায় কাজ করিনি। কোনও প্রমাণ ছাড়াই এই সব রটানো হচ্ছে। আমি স্কুলে পড়াতে আসি। পড়ানোর বিষয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে আমি শুনতে রাজি। যদিও এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাননি প্রধান শিক্ষক।