Sukanta Majumder: ‘মমতা থাকলে রাজ্য আফগানিস্তান হবে’

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Oct 26, 2021 | 6:34 PM

North Bengal: বিমলের বিরুদ্ধে অধিকাংশ মামলা দায়ের হয়েছিল খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই। পাহাড়ে অশান্তি বাধানোর পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বিমল গুরুঙকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ ও ‘গুন্ডা’ বলেও তোপ দেগেছিলেন।

Sukanta Majumder: মমতা থাকলে রাজ্য আফগানিস্তান হবে
মমতাকে আচার্য করার ভাবনা প্রসঙ্গে সুকান্ত (ফাইল ছবি)

Follow Us

কোচবিহার: সদ্যই জিটিএ নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ পেলেই পাহাড়ে বহু প্রতীক্ষিত জিটিএ নির্বাচন (GTA Election) সমাধা হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এরপরেই দিনহাটার সাংবাদিক বৈঠকে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দাগলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)।

সাংবাদিক বৈঠকে সুকান্ত বলেন, ” মমতা ক্ষমতায় থাকলে রাজ্য আফগানিস্তান হয়ে যাবে। পাহাড়ে নির্বাচন করানোর আগে পুলিশ খুন নিয়ে ভাবুন। যাঁরা পুলিশ খুনের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন আগে। তারপরে তো নির্বাচন করাবেন। যাঁরা খুন করল তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিয়েছে রাজ্য সরকার।” এখানেই থামেননি বিজেপি নেতা। আরও একধাপ সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে বলব কাশ্মীর নিয়ে আপনাকে ওত ভাবতে হবে না। আপনি বরং বাংলাদেশ নিয়ে ভাবুন।”

প্রসঙ্গত,  ২০০৭ সালে বিনয় তামাং, বিমল গুরুঙ্গ ও অনীত থাপার মিলিত প্রয়াসের নাম গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। ২০১৭ সালে পাহাড়ের রাজনীতিতে পটপরিবর্তন। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি তুলে পাহাড়ে হামলা ও দাঙ্গা বাধানো, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, কালিম্পঙ ও কার্শিয়াঙে একাধিক সরকারি ভবনে আগুন লাগানো, ভানুভক্ত ভবন ভাঙচুরের ঘটনা-সহ বিভিন্ন অপরাধে নামে জড়ায় বিমল গুরুঙ ও রোশন গিরির। দার্জিলিঙ থানার তত্‍কালীন এসআই অমিতাভ মালিককে খুনের অভিযোগও ওঠে বিমল গুরুঙের বিরুদ্ধে। গ্রেফতারি এড়াতে প্রায় সাড়ে তিন বছর আত্মগোপন করেন বিমল।

সেইসময় বিমলের বিরুদ্ধে অধিকাংশ মামলা দায়ের হয়েছিল খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই। পাহাড়ে অশান্তি বাধানোর পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বিমল গুরুঙকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ ও ‘গুন্ডা’ বলেও তোপ দেগেছিলেন। তখন বিমল গুরুঙ বিজেপি’র পক্ষে। তিনবছর আত্মগোপন করার পর গত বছর অক্টোবরে কলকাতায় আসেন বিমল গুরুঙ। পুলিশি নিরাপত্তায় মধ্য কলকাতার অভিজাত হোটেলে বসে সাংবাদিক বৈঠক করে ‍‌জানান, ‘‘মমতা আইডল। যা বলেন, তা-ই কথা রাখেন। ২০২১ সালে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়ব, মমতাকেই মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চাই।’’

এরপরেই কার্যত বদলে যায় পাহাড়ের চিত্রপট। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ‘পাহাড়বন্ধুদের’ তালিকায় সংযুক্তি ঘটে বিমল গুরুঙ। যা ভালভাবে মেনে নিতে পারেননি, মোর্চার অপর দুই নেতা বিনয় তামাং ও অনীত থাপা। পাহাড়ে মোর্চা কার্যত দুইভাগে ভাগ হয়ে যায়। একটি বিনয়পন্থী, অন্যটি গুরুঙ পন্থী। একুশের বিধানসভা নির্বাচন আবহে বিমল গুরুঙ পাহাড়ে ফেরার পর তাঁর নামে দায়ের হওয়া প্রায় ৭০ টির বেশি মামলা প্রত্যাহার করে নেয় রাজ্য সরকার।

এদিকে ততদিনে মোর্চার হাল বেহাল। অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে বিনয়-বিমল উভয়েই তৃণমূলকে সমর্থন করলেও বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি। বিমলের হাতে মোর্চার দায়িত্বভার তুলে দিয়ে পৃথক দল গঠনে উদ্যোগী হয়েছেন  বিনয় তামাং। পৃথক দল গড়েছেন অনীত থামা। এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে জিটিএ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা বুঝেছে তৃণমূল এমনটাই অনুমান সংশ্লিষ্ট মহলের।

২০১১ সালের ১৮ জুলাই কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় জিটিএ চুক্তি। ওই বছর ২ সেপ্টেম্বর রাজ্য বিধানসভায় পাশ হয় জিটিএ বিল। ২০১৪-র ১৪ মার্চ থেকে কার্যকর হয় চুক্তি। পাঁচ বছরের জন্য স্বাক্ষরিত জিটিএ চুক্তির মেয়াদ আগেই ফুরিয়েছে। বর্তমানে মোর্চা ভেঙে  যাওয়ায় জিটিএ-র প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও বেশ জটিলতা দেখা দিয়েছে। ২০১২ সালে প্রথম জিটিএ নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচন বয়কট করে জিএনএলএফ। দশটির বেশি আসনে প্রার্থী দিয়েই মোর্চার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগে পরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় সিপিএম। পৃথকভাবে  লড়াই করে তৃণমূল। সর্বোচ্চ আসন পেয়ে জয়ী হয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।

তবে বর্তমানে,মোর্চার ভাঙন রোধেও তত্‍পর শাসক শিবির। মঙ্গলবার, অন্তত তেমনই বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। জানিয়েছেন, পাহাড়ে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও বিরোধ নেই। এই পরিস্থিতিতে জিটিএ নির্বাচন হলে ফের ‘কাছাকাছি’ আসতে পারেন অনীত-বিমলরা, পাশাপাশি, পাহাড়ের রাশ যে তৃণমূলের হাতে আসারও একটা সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। মঙ্গলবার, বিজেপির রাজ্য সভাপতির মন্তব্যে ফের স্পষ্ট, মমতার ঘোষণায় কার্যত বিরোধী সুর পদ্ম শিবিরের। ফলে, জিটিএ- নির্বাচন নিয়েও যে ফের একটি কেন্দ্র-রাজ্য  সংঘাত দেখা দিতে পারে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: নতুন ভোটার তালিকা এলেই পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

Next Article