সিতাই: ‘চিরকুটে’ চাকরি নিয়ে সরব তৃণমূলের একের পর এক বিধায়ক। এবার মুখ খুলছেন সেই সব তৃণমূল নেতারা, যাঁরা একসময় বাম নেতা বা কর্মী ছিলেন। বাম আমলে স্বজনপোষণ বা চাকরি দুর্নীতির কথা নাকি তাঁদের অজানা নয়। রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ-র পর এমনই অভিযোগ এনেছেন আর এক তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া। তাঁর দাবি, ৯০-এর দশকে তিনি যখন বামফ্রন্ট করতেন, সেই সময় কীভাবে নেতাদের মধ্যে চাকরি ভাগাভাগি হত, তা তিনি নিজে দেখেছেন। তৃণমূল চিরকুটে চাকরি হওয়ার যে অভিযোগ তুলেছে বামেদের বিরুদ্ধে, সেই সুরে সুর মিলিয়ে বিধায়কের বক্তব্য়, ‘চিরকুটেই হত চাকরি।’
শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সিতাই কেন্দ্রের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া বলেন, ‘৯০-এর দশকে বামফ্রন্টে ছিলাম। আমি জানি কীভাবে দলীয় দফতর থেকে চাকরি হত। পার্টি অফিসে বসে চাকরি ভাগাভাগি হত। বড় শরিকরা বেশি চাকরির কোটা পেতেন। তারপর চাকরি থাকত ফরোয়ার্ড ব্লক, সিপিআই ও আরএসপি-র জন্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘বামেদের ক্যাডার বা হোলটাইমারদের পরিবার ছাড়া কেউ চাকরি পেতেন না। পরীক্ষা নেওয়া বা মেধাতলিকা তৈরির কোনও নিয়ম ছিল না। চাকরি হত চিরকুটেই। প্রাথমিকে বা স্কুলের গ্রুপ ডি ও গ্রুপ সি পদে নিয়োগ হত বলেও জানিয়েছেন তিনি।’
প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা তথা বর্তমান মন্ত্রী উদয়ন গুহ দাবি করেছেন, তাঁর নিজের সুপারিশেও চাকরি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘তখন যে আইন ছিল, সেটা বের করা হোক। কারা চাকরি পেয়েছিলেন বেআইনিভাবে সেই নামগুলো দেওয়া হোক।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রকাশ্য মঞ্চে দলের বিরুদ্ধেই কথা বলতে শোনা গিয়েছে জগদীশ বসুনিয়াকে। দিন কয়েক আগে দলের নেতা-কর্মীদের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, এই রকম চলতে থাকলে ২০২৪ সালে আবারও বিজেপি জিতবে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের লোকেদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে তৃণমূলই, এমন অভিযোগও করতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। এবার বাম-দুর্নীতির অভিযোগে দলের সুরেই সুর মেলালেন তিনি।