
কোচবিহার: ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে টাকার ভ্যাকসিন তত্ত্বে শান তৃণমূলের। তৃণমূলের ব্লক সভাপতির মন্তব্য, এলাকায় টাকা ঢাললেই ভোটে দল জিতবে। আর এই মন্তব্য ভাইরাল হতেই অস্বস্তিতে শাসকদল। তুফানগঞ্জের মহিষকুচি পঞ্চায়েতের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেতা নিরঞ্জন দে-র মন্তব্য করেন, নিজেকে বাঁচাতে এক ব্যক্তি আইপ্যাক-কে দিয়েছেন এক লক্ষ টাকা, ছাব্বিশের ভোট পরিচালনা করতে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। ভোটের আগে ব্য়বসায়ীদের ঠেকে টাকা সংগ্রহের কথাও বলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ভোটের সময়ে এলাকায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ করলেই দল জিতবে। তাঁর বক্তব্যে এখন জোর চর্চা। তৃণমূল এখন প্রকাশ্যেই অর্থ সংগ্রহের ডাক দিচ্ছে, আক্রমণ বিরোধীদের।
বুধবার মহিষকুচি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নিরঞ্জন সরকারের বক্তব্য ঘিরে ছড়িয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। বৈঠকে তিনি বলেন, “নিজেকে বাঁচানোর জন্য একজন আইপ্যাককে এক লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। ২৬ এর ভোটে অঞ্চলে ভোট পরিচালনা করার জন্য তাঁকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে।” তিনি আরও দাবি করেন, “এলাকায় অন্তত কুড়িজন ব্যবসায়ী আছেন যারা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। প্রত্যেকে যদি ৩০ হাজার টাকা করে দেন, তাহলে প্রায় ছয় লক্ষ টাকা তোলা সম্ভব। ব্লক থেকেও ছয় লক্ষ টাকা দেওয়া হবে— মোট ১২ লক্ষ টাকাই হবে ভোটের ভ্যাকসিন। এই টাকা এলাকায় ভোটের সময় খরচ করা গেলে দল জিতবেই।”
আর নিজের এই ভ্যাকসিন তত্ত্বের ক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি “যেমন রোগের ভ্যাকসিন আগে নিলে মানুষ বাঁচে, তেমনই ভোটের আগে এই টাকাটাই ভ্যাকসিনের মতো— দিলে তবেই বাঁচা সম্ভব।”
তৃণমূলের নেতার এই বক্তব্যে স্থানীয় বিজেপি নেতা বলেন, “পাগলের প্রলাপ বকছেন। আজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা তুলে ভোট বৈতরণী পার করবে। ওদের এই পাগলামির ট্রিটমেন্ট হওয়া দরকার।”
যদিও নিরঞ্জন সরকারের ব্যাখ্যা, “ওটা আমার দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বলা হয়েছে। পার্টি চালানোর প্রয়োজনে এই কথাগুলি বলেছি।” তবু তাঁর বক্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল। বৈঠকের ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ।