কোচবিহার: পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে যে তাণ্ডবলীলা চলেছে আজ, তাতে আতঙ্কে সিঁটিয়ে গিয়েছেন ভোটকর্মীরা। কেউ কেঁদে ফেলছেন, কেউ বাথরুমে গিয়ে লুকোচ্ছেন। এমন বিভিন্ন ছবি ধরা পড়েছে। প্রাণ হাতে নিয়ে ডিসিআরসিতে ফিরেছেন ভোটকর্মীরা। আর তারপর দিনহাটায় ডিসিআরসিতে ঢুকেই কার্যত ক্ষোভ উগরে দিলেন ভোটকর্মীরা। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ভোট করিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলছেন তাঁরা। বলছেন, ‘প্রত্যেকের মাথায় বন্দুক ঠেকানো হয়েছিল।’ দিনহাটা-১ ব্লকে ভোট করাতে গিয়ে সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ভোটকর্মীরা।
সংবাদমাধ্যমে সকাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি ও গোলমালের খবর উঠে আসছে। সে সব দেখে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন তাঁদের বাড়ির লোকজনও। ডিসিআরসিতে ফিরে ভোটকর্মীরা বলছেন, ‘বাড়ির লোকেরা চিন্তা করছে। বার বার ফোন করছে। আমাদের তাঁদের আশ্বস্ত করতে হচ্ছে, যে আমরা ঠিক আছি।’ পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটকর্মীদের জীবন নিয়ে কার্যত খেলা হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। এক ভোটকর্মী বলছেন, ‘আমার বাবা জীবিত নেই। আমার উপর গোটা পরিবার দাঁড়িয়ে আছে। আজ যদি আমার কিছু হয়ে যায়, তার দায়িত্ব কে নেবে?’ এই পুরো অব্যবস্থার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দিকেই আঙুল তুলছেন তাঁরা।
ভোটকর্মীদের ক্ষোভ রয়েছে দিনহাটা-১ ব্লকের বিডিও-র বিরুদ্ধেও। তাঁদের বক্তব্য, ভোটের ট্রেনিংয়ের সময়ে বিডিও তাঁদের আশ্বস্ত করেছিলেন। বলা হয়েছিল, কোনও গোলমাল হবে না। তারপর আজ এভাবে প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরতে হওয়ায় বেজায় বিরক্ত ভোটকর্মীরা।
অপর এক ভোটকর্মী বলছেন, ‘গতরাত থেকেই এলাকায় বোমাবাজি চলেছে। সকালে কয়েক ঘণ্টা ভোট নির্বিঘ্নে হওয়ার পর আততায়ীরা ঢুকে পড়ে এলাকায়। বাইরে পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায়। তারপর বুথে ঢুকে পড়ে। সবার হাতে পিস্তল ছিল। আমাদের ভয় দেখিয়ে ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে ছাপ্পা মারতে শুরু করে।’ যদিও ভোটকর্মীদের এই বিক্ষোভ নিয়ে এখনও পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসনের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।